নিজস্ব প্রতিনিধিঃনভেম্বর ২০১৮ থেকে জানুয়ারি ২০১৯, এই তিন মাসে মোট ৪১০টি শিশুকে দেওয়া হয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ হেপাটাইটিস বি টিকা। ক্যাগ (CAG)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে সামনে এসেছে ঝাড়খণ্ডের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এমনই ভয়াবহ রুপ। ঘটনাটি ঝাড়খণ্ডের রামগড়ের। জানা যাচ্ছে, রামগড়ের জেলা হাসপাতালেই ঘটেছে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ক্যাগের রিপোর্ট জানা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ওই জেলা হাসপাতালের একটি হেপাটাইটিস বি টিকার স্লটের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, ওই মেয়াদোত্তীর্ণ হেপাটাইটিস বি টিকাগুলিই ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, ওই রিপোর্টে সামনে এসেছে আরও বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, জুলাই ২০১৮ থেকে মার্চ ২০১৯-এর মধ্যে দেওঘরের সরকারি হাসপাতাল অন্ততপক্ষে ৪১৮৫ জনকে ডেক্সোনার জাল ইনজেকশন দিয়েছে। ২৫ জুলাই ২০১৮ থেকে ২৩ জানুয়ারী ২০১৯-এর মধ্যে, দেওঘর জেলা হাসপাতালে Dexona 2 ML ইনজেকশনের ১৭৫০০ টি শিশি এসেছিল। কিন্তু সেগুলোর একটাই রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়নি। তার পরিবর্তে ব্যভারভ করা হয়েছে অন্য ইনজেকশন। সম্প্রতি গোয়াহাটির ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে ওই ইনজেকশন পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাতেই দেখা গিয়েছে যে ব্যবহার করা ওই সমস্ত ডেক্সোনার ইনজেকশনই জাল। এরপরে সেগুলি পুনরায় পরীক্ষার জন্য কলকাতার CDL-এ পাঠানো হয়, কিন্তু তাতেও একই রিপোর্ট এসেছে বলে খবর।
এই ওষুধ বিভ্রাট প্রসঙ্গে প্রধান নিরীক্ষক ইন্দু আগরওয়াল বলেছেন, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের ৬টি জেলার সরকারি হাসপাতালে ভয়ানক ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে। ওই ৬ জেলা হল রাঁচি, দেওঘর, রামগড়, হাজারিবাগ, পালামু এবং পূর্ব সিংভুম। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, বিগত এই কয়েক বছরে ঝাড়খণ্ডের এই সমস্ত হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় ৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৪-১৫ সালে যেখানে ৭.৫ লক্ষ রোগী ওপিডিতে পৌঁছাতেন, ২০১৯ সালে সেই রোগীর সংখ্যাই বেড়ে ১২ লক্ষে পৌঁছেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে রোগীর সংখ্যা এত পরিমাণে বাড়লেও কোনও হাসপাতালের অপিডিতে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। ওপিডিতে রোগীদের দেখাশোনা করার জন্য এখনও একজন চিকিৎসকই রয়েছেন।
একইরকম বেহাল অবস্থা হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগেরও । জানা যাচ্ছে, এই ৬ জেলার প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ হাজার রোগী আসে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষার জন্য। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এখনও প্রতিটি হাসপাতালেই মাত্র ১২-১৪টি যন্ত্রই রয়েছে পরীক্ষার জন্য।