নিজস্ব প্রতিনিধি: লখিমপুর কৃষক হত্যা যে পূর্বপরিকল্পিত সেটা মঙ্গলবার সকালেই নিজেদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল তথা সিট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই এই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের সংসদীয় দল আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করে। মঙ্গলবার বিকেলে গোয়ার পাঞ্জিমে এক জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে উঠে এল সেই প্রসঙ্গ। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথেরও পদত্যাগ দাবি করেছেন। পাঞ্জিমের জনসভা থেকে তিনি বলেন, লখিমপুরে কৃষকদের উপর গাড়ি চালিয়ে খুন করে দিল মন্ত্রীর ছেলে, আজ সিট রিপোর্ট দিয়েছে, রিপোর্টে পরিস্কার বলা হয়েছে এটা পরিকল্পিত খুন। এরপরই তৃণমূল নেত্রী সুর চড়িয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘তাহলে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দেওয়া উচিৎ নয় কী? এ নিয়ে তো প্রধানমন্ত্রীর কথা বলা উচিত’।
লখিমপুরকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্র এবং কয়েকজন বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। যদিও কেন্দ্রীয়মন্ত্রী এবং তাঁর ছেলে দুজনেরই দাবি করছেন এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই। কিন্তু আদালতের নির্দেশে গঠিত সিটের তদন্তে উঠে এল উল্টো চিত্র। সিটের দাবি, লখিমপুরের খেরিতে যে কৃষক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আশিস মিশ্রের গাড়ির ধাক্কায় ৫ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে এবং ঘটনা পরবর্তী হিংসায় আরও ৪ জনের মৃত্যুর পুরো ঘটনাই আগে থেকে সাজানো ছিল। সকালে সিটের রিপোর্ট সামনে আসতেই বিজেপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আক্রমণ শুরু করে তৃণমূল সাংসদরা। বিকেলে তৃণমূল নেত্রী নিজেও অমিত শাহ-সহ যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করলেন গোয়ার জনসভা থেকে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গোয়ায় দুটি জনসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছরই গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন। ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে গোয়ায় নিজেদের শক্তি বাড়িয়েই চলেছে তৃণমূল। দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ইতিমধ্যেই দলে টেনেছে তৃণমূল। এবার জনসভায় বিজেপিকে তুমুল আক্রমণের পাশাপাশি এদিন বাংলায় তৃণমূল সরকারের সাফল্যও তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আমরা পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজোর আগে ক্লাবগুলোকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছি, বিজেপি পেরেছে দিতে? কোথাও শুনেছেন এমন কথা? এরপরই তিনি গোয়াবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, আপনাদের সবচেয়ে বড় উৎসব আসন্ন। সামনেই বড়দিন ও নববর্ষ, তাই আপনারাও প্রাণ খুলে উৎসবে ভাসুন। তৃণমূল এই রাজ্যে ক্ষমতায় এলে উৎসবে অনুদান দেবে।