নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের মুখে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের বিড়ম্বনায় ফেলে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের স্বামী পরাকলা প্রভাকর। বুধবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নির্বাচনী বন্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি বলে তিনি আখ্যা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই দুর্নীতির ফল মোদি সরকারকে ভুগতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। লোকসভা ভোটের মুখে খোদ দেশের অর্থমন্ত্রীর স্বামীর এমন মন্তব্যে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও প্রভাকরের মন্তব্য নিয়ে পদ্ম শিবিরের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
গত মাসখানেক ধরেই নির্বাচনী বন্ড নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে গোটা দেশে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ মোদি সরকারের চালু করা নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করতে দেশের বৃহত্তম সরকারি ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে নির্দেশও দেয়। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার দেওয়ার বন্ড তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আর তাতেই বেরিয়ে পড়ছে বিস্ফোরক সব তথ্য। স্বচ্ছতা আর সততার ধ্বব্জাধারী কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি যে নির্বাচনী বন্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী তা প্রকাশ হয়েছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী,
২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিজেপি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৬,৯৮৬ কোটি টাকা পেয়েছে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সিবিআই, ইডি ও আয়কর দফতর যে সব সংস্থায় দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগে তল্লাশি চালিয়েছে, সেই সংস্থাগুলি টাকার থলি উপুড় করে দিয়েছে বিজেপির কোষাগারে। ওই তথ্য তুলে ধরে গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধীরা নিশানা করে চলেছেন মোদি-শাহদের।
এদিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের স্বামীর গলাতেও শোনা গিয়েছে বিরোধীদের অভিযোগ। একসময়ে অবিভক্ত অন্ধপ্রদেশে বিজেপির মুখপাত্রের দায়িত্ব সামলানো পরাকলা প্রভাকর বলেছেন, ‘নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা প্রমাণিত। সকলে এটাও বুঝতে পেরেছেন, এটি শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। এটা বিজেপিকে ভোগাবে বলেই মনে হয়। এই দুর্নীতির কারণে কেন্দ্রের বর্তমান সরকারকে ভোটাররা চরম শাস্তি দেবে।’