রাজস্থান : ডামাডোল চলছে কংগ্রেসে। সভাপতি নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোলাম নবি আজাদ কংগ্রেস ছেড়েছেন। তেলেঙ্গানার আরেক কংগ্রেস নেতা প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ এমএ খানও দল ছেড়েছে। দলের এই বেহাল দশা এবং গোষ্ঠীকোন্দলের প্রভাব এবার দেখা গেল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনে। রাজ্যে ক্ষমতাসীন হওয়া সত্ত্বেও রাজস্থানের ছাত্রভোটে কার্যত ধরাশায়ী হয়ে গেল ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া বা এনএসইউআই। রাজস্থানের ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিতেও ছাত্র সংসদের সভাপতির পদ পায়নি কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন। বরং ভাল ফল করেছে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। এমনকী, ভাল ফল করেছে বামেরাও। রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেইলট ও শচিন পাইওলটের মধ্যে লড়াই সর্বজনবিদিত। ছাত্র ভোটে সেই লড়াই কংগ্রেসকে ডুবিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এবারে রাজস্থানের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি নজর ছিল রাজস্থান বিশ্ববিদ্যলয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয় এনএসইউআই-এর শক্ত ঘাঁটি হিসাবেই পরিচিত। কিন্তু সেখানে এবার কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন তৃতীয় স্থানে শেষ করল। কারণ সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। শচিন পাইলটের ঘনিষ্ঠ নেতা মুরারী লাল মীনার মেয়ে ঋতু জোরওয়াল রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সভানেত্রী পদে এনএসইউআই-এর হয়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে দলের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ঋতু জিততে পারেননি। জিতে যান অন্য নির্দল প্রার্থী। আর ঋতু দ্বিতীয় হন। এনএসইউআই-এর প্রার্থী তৃতীয় স্থানে শেষ করেন। শুধু রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় নয়, রাজস্থানের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত এনএসইউআইয়ের একই অবস্থা। একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র সংসদের সভাপতি পদে তারা জেতেনি। ১০টির মধ্যে পাঁচটি আসন গিয়েছে এবিভিপির দখলে। দুটি আসনে জিতেছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। রাজস্থানের মতো রাজ্যে বাম ছাত্র সংগঠনের এই সাফল্য চমকপ্রদ।
রাজস্থানে এবিভিপির এই সাফল্য এবং কংগ্রেসের ব্যর্থতাকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের আগাম ইঙ্গিত বলে দাবি করছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলছেন, মূল সংগঠনের মতোই কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনও ধ্বংসের দিকে। এই ফলাফল সেটাই প্রমাণ করে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে আবার বলছেন, রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের উপর ছাত্ররা কতটা ক্ষুব্ধ, সেটাই এই ফলাফলে প্রকাশ পেল।