নিজস্ব প্রতিনিধিঃ যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীকে গুরুদ্বারে প্রবেশে বাধা দিল খলিস্তানিরা। এই ঘটনার মর্মে ভারত যুক্তরাজ্যের বিদেশমন্ত্রক ও পুলিশের কাছে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলেই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। স্কটল্যান্ডের একটি গুরুদ্বারে ভারতীয় হাইকমিশনারকে খলিস্তানপন্থীরা প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
সামাজিক মাধ্যমে এক ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, স্কটল্যান্ডে গুরুদ্বারে প্রবেশের সময় দোরাইস্বামীকে বাধা দেওয়া হয়। ভারতীয় হাইকমিশনারের গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা করা হয়। কোন বিতর্কে না গিয়ে গুরুদ্বার প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে ভারতীয় হাইকমিশনারের গাড়ি। খলিস্তানিদের বলতে শোনা যায়, ভারত কানাডা এবং অন্যান্য জায়গায় শিখদের বিরুদ্ধে আঘাত হানছে। ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে প্রতিটি শিখের প্রতিবাদ করা উচিত। কোনও ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বা কোনও ভারতীয় সরকারী আধিকারিক যিনি গুরুদ্বার পরিদর্শন করবেন তাঁদের সাথে এইভাবে আচরণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
খলিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতের মদতের অভিযোগ তুলেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এই অভিযোগের পরেই দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। আর এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশনারকে গুরুদ্বারে প্রবেশে বাধা দেওয়া হল। ফলে ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেবে বলেই ধারণা আন্তর্জাতিক মহলের।
ওই গুরুদ্বারের ম্যানেজিং কমিটির আমন্ত্রণেই দোরাইস্বামী সেখানে যান বলে জানা গিয়েছে। খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গুরুদ্বারের ম্যানেজিং কমিটিকেও হুমকি দেয় বলে আরেক ভিডিওতে দেখা যায়। ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি)।
এসজিপিসি’র সাধারণ সম্পাদক গ্রেওয়াল বলেন, যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতকে গুরুদ্বারে প্রবেশ থেকে বাধা দেওয়া উচিত ছিলনা। গুরুদ্বারগুলি প্রতিটি ধর্মের জন্য। উল্লেখ্য, কানাডার সংসদে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আমি একটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়ে সংসদকে সচেতন করতে চাই। আমি বিরোধী দলের নেতাদের সরাসরি জানিয়েছি। কিন্তু, আমি এখন সব কানাডাবাসীকে বলতে চাই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কানাডার নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সক্রিয়ভাবে কানাডিয়ান নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর এবং ভারত সরকারের মধ্যে সম্ভাব্য সংযোগের অভিযোগের তদন্ত করছে। কানাডা এরটি আইন মান্যকারী দেশ। আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং আমাদের সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা আমাদেরই করতে হবে।’
কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানিয়া জোলি ভারতের শীর্ষ কূটনীতিককে কানাডা থেকে বহিষ্কার করেছিল। পাল্টা কানাডার এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ভারত। কানাডা সরকারের অভিযোগ অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। তারপরেই দুই দেশের সংঘর্ষ চরমে পৌঁছয়।