নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্প্রতি, বিশ্বনবী হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বিজেপি থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন দলের দুই মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দল। পাশাপাশি তাঁদের প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল হয়েছে। কিন্তু এরপরেও ক্ষোভের আগুন নেভে নি। লাগাতার মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছেন নূপুর শর্মা। আপাততঃ তিনি এবং তাঁর পরিবার নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রয়েছেন। যদিও বহিষ্কৃত বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে এখনও গোটা দেশ তোলপাড়। এরই মধ্যে প্রখ্যাত অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের (Naseeruddin Shah) একটি বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে ফের অসহিষ্ণুতা বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠল গোটা দেশে। সম্প্রতি একটি নিউজ চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বললেন, দেশের শাসকদলের মদতেই দেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে পড়ছে। সরকার কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করছেন। এমনকী তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বললেন, এই বিষ ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীকেই হস্তক্ষেপ করতে হবে।
বিশ্বনবী হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে নূপুরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে দিন কয়েক আগেই বিজেপি থেকে। এই বিষয়ে নাসিরুদ্দিন শাহ বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত অনেক দেরিতে নেওয়া নগণ্য পদক্ষেপ, ওই মন্তব্যের পর থেকে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ মুখ খোলেন নি। প্রধানমন্ত্রীর এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করা উচিত। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছেন যে, তিনি যাতে খুব শীঘ্রই এই লোকগুলোকে সুপরামর্শ দেন। তাঁর মতে, হরিদ্বারে ধর্ম সংসদে যেগুলি বলা হয়েছে, সেগুলি যদি আপনি বিশ্বাস না করেন তাহলে প্রকাশ্যেই বলুন, আর যদি বিশ্বাস করেন তাহলেও প্রকাশ্যেই বলুন। বিজেপির বক্তব্য নূপুর শর্মার মতন মানুষ এদেশের প্রান্তিক শক্তি। কিন্তু অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের বক্তব্য, এরা মোটেও প্রান্তিক শক্তি নন।
এরা শুধুমাত্র শাসকদলের আশ্রিত। তাই এই ধরনের ঘটনা ফের ঘটলে তিনি একদমই অবাক হবেন না। সমস্যা হল, এই দেশে যেই শান্তির কথা বলবেন, তাঁকেই জেলে যেতে হবে। কিন্তু কেউ গণহত্যার কথা বললে, তাঁকে সামান্য শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুতরাং দেশে চরম দ্বিচারিতা চলছে। এমনকী নাসিরুদ্দিন শাহ বিবেক অগ্নিহোত্রীর ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ এর বিষয় নিয়েও ওই সাক্ষাৎকারে সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, সরকার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে, এই ধরনের মনগড়া নানা কাহিনীকে উৎসাহ দিচ্ছে। এবার নাসিরুদ্দিনের এই মন্তব্যকে খোঁচা দিয়েই ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ এর প্রযোজক বিবেক অগ্নিহোত্রী (Vivek Agnihotri) বলেছেন, অভিনেতা ঠিকই বলেছেন, তিনিও যখন কাশ্মীরি হিন্দুদের (Kashmiri Pandits) গণহত্যার কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন, তখন তাঁকেও হেনস্তা করা হয়েছিল।