নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দিল্লিতে শুরু হয়েছে কৃষক বিক্ষোভ। এবার পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমান্তে জড়ো হওয়া কৃষকদের উপর কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ল নিরাপত্তার কর্মীরা। শম্ভু সীমান্ত হল কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচীর একটি গুরুত্বপূর্ণ মিলনস্থল। আচমকাই এই কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ার ফলে কমে যায় দৃশ্যমান্যতা।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভ শুরুর এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে ড্রোন থেকে কাঁদনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে বিক্ষোভরত কৃষকদের আটক করার জন্য স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী কারাগারে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তকে বরখাস্ত করল আম আদমি পার্টি ( আপ ) সরকার। অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার বলেছে যে,’ কৃষকদের দাবি ন্যায্য। প্রতিটি নাগরিকের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। তাই কৃষকদের গ্রেফতার করা ঠিক নয়।‘
বিক্ষোভকারীরা যাতে অন্য জেলা থেকে হরিয়ানায় ঢুকতে না পারে, সেজন্য অতিরিক্ত ৫০ কোম্পানি পুলিশ মোতায়েন করেছে সেই দেশের সরকার। হরিয়ানা সরকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কৃষক অভিযানকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অশান্তি না ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য কুরুক্ষেত্র, কইথাল, জিন্দ, হিসার, সিরসা জেলায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হরিয়ানা। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে কৃষকরা যাতে জমায়েত করতে না পারে, সেজন্য কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় রাজধানী দিল্লি জুড়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত জারি থাকবে এই ১৪৪ ধারা।
ইতিমধ্যে কৃষক সংগঠনের প্রায় ২০০টি বেশি ইউনিয়ন দিল্লি অভিযান শুরু করেছে। শস্যের ওপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সুনিশ্চিত করতে আইন আনার দাবি জানিয়েছে কৃযকরা। পাশাপাশি স্বামীনাথন কমিশন যে সব প্রস্তাব দিয়েছে, তা কার্যকর করারও দাবি জানিয়েছে তাঁরা। সেইসঙ্গে লখিমপুর খেরিতে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, তার সুবিচারও দাবি তুলেছে তাঁরা। কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গোয়েল কৃষকদের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক করে আদৌ কি সমাধানসূত্র বেরোবে, এখন সেটাই দেখার। উল্লেখ্য, এর আগেও কৃষকদের আন্দোলনের জেরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল রাজধানী দিল্লি। কৃষকদের আন্দোলনের জেরে চাপে পডে যায় কেন্দ্রীয় সরকার। ফের আরও এক একবার কৃষক আন্দেলনের সূত্রপাত হতে চলেছে রাজধানীর বুকে।