নিজস্ব প্রতিনিধি: আর হাতে গোনা ২৯ দিন। তারপরেই রাজ্য সাজবে দুর্গাপুজোর মেজাজে। যাই হোক, শহরের তুলনায় গ্রামের জমিদার বাড়ির পুজো গুলির ইতিহাস জানার ন্যাক থাকে বেশি সবার। কারণ, জমিদার পরিবারের পুজোগুলিতে এমন কিছু কিছু নিয়ম রয়েছে, যা অন্যান্য পুজো গুলির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বেশিরভাগ জমিদার বাড়ির পুজোতেই কিছু না কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে। বলিপ্রথা হোক বা ভোগের নিয়ম। প্রতিমা হোক বা পুজোমণ্ডপ, আজ এমনই এক জমিদার বাড়ির পুজোর বিষয়ে আপনাদের জানাবো, দুর্গাপুরের কুলডিহা গ্রামের চ্যাটার্জি পরিবারের দুর্গাপুজো, চলতি বছরে এই দুর্গা পূজো ৩১৮ বছরে পা দেবে। তবে এখন চ্যাটার্জি পরিবারের জমিদারিত্ব না থাকলেও তাঁদের বাড়ির দুর্গাপূজোর নিয়ম যুগ যুগ ধরে একই রয়ে গিয়েছে। একসময় কুলডিহা গ্রামের জমিদারের নাম ছিল জানকিনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনিই প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন।
প্রচুর অর্থ ব্যয় করে শুরু হয় এই পুজো, কিন্তু এখন লোকজন ও অর্থের অভাবে সেই পুজোর মেজাজ ফিকে হয়ে গিয়েছে। তবে এই পুজোর বিসর্জন বেশি আকর্ষণীয় গ্রামের মানুষের কাছে। কারণ কুলডিহার দুর্গাপুজোর বিসর্জনের দিন পাশের হাজরা পাড়ার পুরুষরা লাঠি খেলতে আসে। তারপর কাঁধে করে দেবীকে নিরঞ্জন করা হয়। শাস্ত্রমতে দুর্গা পুজোয় সানাই বাজানো নিষিদ্ধ থাকলেও চ্যাটার্জি পরিবারের দুর্গা পুজোয় ঢাক, ঢোলের সঙ্গে থাকে সানাইও। সেই নিয়ম এখনও চালু রেখেছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে কেন দুর্গাপুজোতে সানাই বাজানোর রীতি রেখেছিলেন জমিদার মশাই তা জানা নেই।
বংশপরম্পরায় সেই রীতি এক পুরুষ থেকে অন্য পুরুষের কাঁধে চলে যায়। এভাবেই ৩১৬ বছর ধরে চলে আসছে পুজো। নিয়ম অনুযায়ী এখানে বৈষ্ণব মতে দেবী দুর্গাকে পুজো করা হয়। ভোগ রান্না করেন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। মহা সপ্তমীর দিন এখানে দেবীকে সাত রকম ভাজার সঙ্গে সাত শের চালের ভাত ভোগ দেওয়া হয়। অষ্টমীর দিন আট রকমের ভাজার সঙ্গে মহাভোগ দেওয়া হয়। তাই জমিদারিত্ব না থাকলেও নিয়মটি এখনও অটুট রেখেছেন তারা।