নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাঙালি নাকি শুধুই পেটপুজো আর ভাতঘুম দিতে পারে, ব্যবসা করা নাকি বাঙালির কাজ নয়। এমনটাই মনে করেন বহু মানুষ। কিন্তু একথা যে একেবারে ভুল তা প্রমাণ করে দিলেন মৌমিতা মিস্ত্রী। আর এই মৌমিতার মত মেয়েরাই আমাদের সমাজের দশভূজা। যারা নিজের স্বপ্নে বাঁচার জন্য রিস্ক নিতে জানে। এদিন তাঁর মোমোর স্টলে পৌঁছে তাঁর জার্নি কেমন ছিল জানলেন প্রতিনিধি অরণী ভট্টাচার্য।
একটি ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে চাকরি করতেন মৌমিতা। গত লকডাউনে আন্দাজ করতে পেরেছিলেন চাকরিটা চলে গেলেও যেতে পারে। অন্য কেউ হলে হয়ত ভাবতে বসত এই বাজারে চাকরি না থাকলে কি করবে? বা অন্য জায়গায় চাকরির চেষ্টা চালাত। কিন্তু, মৌমিতা সেসব কিছুই করেননি। বদ্ধপরিকর ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে। ভেবেই নিয়েছিলেন চাকরি ছেড়ে এরপর ব্যবসাই করবেন। এরপর নিজেই সেই চাকরি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। শুরু করেন একটি মোমোর দোকান। বলা ভালো ছোট্ট একটি ভ্যানে শহরের রাস্তায় মোমো বানিয়ে শুরু করেন বিক্রি করতে। কিন্তু প্রথমেই যে পথটা খুব সুগম হয়না আমরা সবাই জানি। তাঁর ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম নয়।
বাড়ির কেউ পাশে দাঁড়াননি তখন মৌমিতার। পরিবারের তরফে একেবারেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত মনে হয়েছিল হঠকারি আর স্বাভাবিকভাবেই তা ছিল তাঁদের কাছে একেবারেই নাপসন্দ। কিন্তু পরিবারের এই অপছন্দকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের মত করে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে সে। তবে পাশে এসে তখন দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর বহু দিনের বন্ধু তথা হবু স্বামী।
শুরুর দিকে তাঁর কাছে থাকত শুধু স্টিম মোমো, ফ্রায়েড ও প্যান ফ্রায়েড মোমো। পরবর্তীকালে তাঁর মস্তিস্কপ্রসূত বিভিন্ন রকমের মোমো নিয়ে নতুন ছোট্ট একটি দোকান শুরু করেছেন। সেখানে রয়েছে চিরাচরিত মোমোগুলির পাশাপাশি চকোলেট মোমো, আফগানি মোমো, মালাই মোমো, কুড়কুড়ে মোমো, তন্দুরি মোমো, ইতালিয়ান ম্যাকারনি মোমোর মত বিভিন্ন নানা নতুন ধরনের মোমো খাইয়ে সে রসনাতৃপ্ত করছে গোটা শহরের।