-273ºc,
Friday, 2nd June, 2023 9:35 pm
সুস্মিতা ঘোষ: আজ বিজয়া দশমী। মাত্র চারদিনের জন্যে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি এসেছিলেন উমা। চারদিন শেষ, এবার কৈলাস ভ্রমণের পালা দেবী দুর্গার। ফের ১ বছরের অপেক্ষা। এই চারটে দিনের জন্যে সারা বছরের পরিকল্পনা। তবে এবার হয়তো একটু বেশি অপেক্ষা করতে হয়েছে। কারণ গত দু বছর দুর্গা পুজো এলেও আনন্দে মাততে পারেননি কেউই। করোনার আবির্ভাবে ঘরবন্দী জীবন কেটেছে সবার। তবে এখন আর কাউকে ভয় দেখাতে পারবে না করোনা, মার্কেটে এসেছে করোনাকে দমন করার টোটকা। তাই মানুষ সবকিছু ভুলে এই বছর ফের পুরোনো মেজাজে ফিরেছেন। একেবারে দুঃখ-কষ্ট সব ভুলে দুর্গা পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। সাবেকি, বনেদি, থিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ বাংলার সর্বত্র এই চারটে দিন আলোতে আলোতে শহর মোহময়ী হয়ে উঠেছিল। দুর্গাপুজো টা যেন সবার, আট থেকে আশি, ধনী-দরিদ্র সবাই দুঃখ-কষ্ট ভুলে এই কটা আনন্দের চাদরে একেবারে মুড়েছিলেন।এমনকি অনাথ আশ্রম থেকে বৃদ্ধাশ্রম সবাই চুটিয়ে আনন্দ করেছেন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব বলে কথা। পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছিল ব্যারাকপুরের আনন্দ নিকেতনও, আপনাপন এবং বচপানও নামক সংস্থাটিও।
কিছুদিন আগেই এই সংস্থার কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা ‘এই মুহুর্তে’র চ্যানেল যোগাযোগ করছিলাম, তাঁদের হোমে পুজোর আয়োজনের বিষয়ে নানা তথ্যাবলী জানার জন্যে।
তাঁরা আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন এই বিষয়ে। বিশেষ করে, এই তিনটি হোমের যিনি প্রতিষ্ঠাতা শ্রীমতী Camille Johnson তাঁর সঙ্গে কিছু কথোপকথনে জানতে পারি যে, তাঁর সংস্থায় শুধু বৃদ্ধারাই আছেন তা নয়, ১ থেকে আঠারো বছরের ছেলে-মেয়েরাও আছে।
যাদের মধ্যে কাউকে রাস্তা থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে, কাউকে রেড লাইট এলাকা থেকে আবার কারুর বাবা-মা আর্থিকভাবে স্বচ্ছ নয় সেই পরিবারের বাচ্চারাও এই পরিবারের একটি অংশ।
আর বৃদ্ধাদের সঙ্গে বাচ্চাদের রাখার সিদ্ধান্ত একটাই যাতে বয়স্ক দাদু-দিদারা শেষ বয়সে এসে যাতে বাচ্চাদের সান্নিধ্যে থাকতে পারে এবং পরিবারের জন্যে কষ্টে না ভোগেন।
সুতরাং যারা এতটাই ভাবেন তাঁরা, পুজোর দিনগুলিতে বাচ্চা থেকে বয়স্ক দাদু-দিদাদের জন্যে কিছু করবেন না তা কী হতে পারে! পুজোর অষ্টমীর দিন তাঁরা একেবারে বাস ভাড়া করে কলকাতার অলি-গলি প্যান্ডল পরিদর্শন করিয়েছেন কচিকাচাদের থেকে শুরু করে বয়স্ক দাদু-দিদাদেরও। একেবারেই পরিবারের মতো সবাইকে গুছিয়ে নিয়েছেন এই সংস্থার কর্ণধার।
কলকাতার শ্রীভূমি থেকে কল্যাণী টুইন টাওয়ার সবটাই দেখেছে এই পরিবারের কচিকাচারা। শুধু তাই নয়, আয়োজন ছিল বিশেষ খাওয়াদাওয়ারও। ছবিতে প্রকাশিত কিছু ছবিতে এই সংস্থার কর্ণধারকেও বাচ্চাদেরকে খাইয়ে দিতে দেখা গিয়েছে। আর সবটাই করা তাঁদের একটি আনন্দ দেওয়ার জন্যে, আসলে পুজো তো সবার। আনন্দ করার অধিকারও সবার।
তাই ঘরে ঘরে এখন দুর্গা। যা জ্বলন্ত উদাহরণ হলেন, শ্রীমতি Camille Johnson। তাঁর আনুকূল্যে এখানকার ছেলে-মেয়েরাও পড়াশোনা শিখছে। বিভিন্ন শিল্পের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় ঘটছে। এটাও কম কী!
তবে পুজো পরিক্রমায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেকে নাও যেতে পারলেও যারা গিয়েছেন সবাই চুটিয়ে মজা করেছেন। তা একেবারে নিচের ছবি গুলিতে!