এই মুহূর্তে




মায়ের পুজোয় আজও তিনবার বন্দুক দাগা হয় সান্যাল বাড়িতে




নিজস্ব প্রতিনিধি : বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে উমা। অপেক্ষা শুধু চৌকাঠে পা দেওয়ার। উমাকে বরন করে নিতে প্রস্তুতি শুরু করে নিয়েছে ভক্তরা। আর তো কটা দিন। এরপরেই মহাসমারোহে পালিত হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো।তবে পুজো হল সম্প্রীতির মিলনস্থল। পুজোর টানেই দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসে কর্মসূত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু মানুষজন। তেমনই ডোমকলের ভাতশালার সান্যালবাড়ির আত্মীয় পরিজনেরাও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন মা’কে দেখবেন বলে। যাকে বলে মায়ের ডাকে সাড়া দেওয়া।

সান্যালবাড়ির বাড়ির দু্র্গা পুজো প্রায় ১৫৭ বছরের পুরনো। সেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে নিয়ম-রীতি।কিছুই পরিবর্তন হয় নি। মূর্তি তৈরি থেকে বলি, বদলেছে অনেক কিছুই। তবু যা আছে, সেটা হল খাঁটি ইতিহাস আর ঐতিহ্য। এই বাড়ির দুর্গা পুজোয় অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল অষ্টমীর দিন বলির সময় নিজেদের লাইসেন্সধারী বন্দুক থেকে তিনবার বন্দুক দাগা দেওয়া। এই নিয়মের এখনও পর্যন্ত বদল হয়নি সান্যালবাড়িতে।

আজ থেকে প্রায় ১৫৭ বছর আগে ব্রিটিশরা ভারতে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল নদিয়ার শিকারপুরে। মায়ের পুজোয় ছাগ বলি দেওয়ার প্রথা চালু ছিল। পুজোর শুরুও হয়েছিল প্রজাদের কল্যাণ ও স্বদেশিদের সংঘবদ্ধ হওয়ার শপথ নেওয়ার জন্য।
তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে শিকারপুরের জমিদার বাড়ি উঠে আসে ডোমকলের ভাতশালায়। তুলে নিয়ে আসা হয় মায়ের পুজোর কাঠামো। আর ভাতশালার বাড়ির পুজোর শুরু থেকেই অষ্টমীতে ছাগ বলির রীতি তুলে দেওয়া হয়। পরিবর্তে দেওয়া হয় কুমড়ো বলি। কিন্তু একই রয়ে গিয়েছে বন্দুক দাগার নিয়মটা।

এখন সান্যাল বাড়িতে নতুন প্রজন্মের অনেক সদস্য হয়েছেন।পুজোর কটা দিন বাড়িতে নাচগানের সংস্কৃতির চর্চাও আছে। তাই পুজোর কটা দিন সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির সদস্যদের নিয়ে সেখানে ঘরোয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে। প্রত্যেক বছর পুজোর সময় সান্যাল বাড়ির নতুন প্রজন্মের সদস্যরা হইচই করে থাকেন। তবে এবার সান্যাল বাড়ির অষ্টমীর সন্ধ্যায় মণ্ডপ চত্বরে নদিয়ার বগুলা থেকে আসা পুতুল নাচও হয়ে থাকে।

অতীতে পুজো প্রাঙ্গনে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হতো। হতো নরনারায়ণ ভোজ। এখন জমিদারি নেই। নেই প্রজারাও। তবে নিয়ম মেনে অষ্টমীর দিন নরনারায়ণ ভোজ হয়।

এই নিয়ে সান্যাল বাড়ির বর্ষীয়ান সদস্য মাধবকুমার সান্যাল জানান, ‘আমাদের পারিবারিক পুজোয় নানা ধরনের নিয়ম নিষ্ঠার রীতি রয়েছে। যা পালনের মধ্য দিয়ে পুজো সম্পন্ন হয়। সান্যাল বাড়ির দুর্গাপুজো শুধু পুজো নয়, এই বাড়ির পুজো মানে আত্মীয় বন্ধু ও স্বজনদের মিলনস্থল।’

সান্যাল বাড়ির পুজোর শুরু থেকে বংশের কারও চণ্ডীপাঠ করা নিয়ম। একসময় নিয়মিতভাবে চণ্ডীপাঠ করতেন জমিদার সুধীরকুমার সান্যাল। তাঁর আগে কেউ না কেউ করতেন। সময়ের পরিবর্তনে পরবর্তিত হয়ে বর্তমানে চণ্ডীপাঠ করেন মণীন্দ্রকুমার সান্যালের মেয়ে কলকাতা নিবাসী শিক্ষিকা বন্দনা সান্যাল ঠাকুর।

প্রতি বছর বাবার বাড়ির পুজোয় চণ্ডীপাঠের টানে বন্দনা সান্যালও মা দুর্গার মতো ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভাতশালার বাড়িতে আসেন। পুজোর কটা দিন বাবার বাড়িতে কাটিয়ে বিসর্জনের পর তিনিও বাড়ি ফিরে যান।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

রাজ্যে দুর্গাপুজোয় মদ বিক্রিতে আবগারি দফতরের আয় বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণ

Lakshmi Puja : এই মন্ত্র পাঠ করলে ভক্তের ওপর সদা সর্বদা প্রসন্ন থাকবেন মা লক্ষ্মী

জানেন কী কার অভিশাপে দেবী লক্ষ্মীকে আশ্রয় নিতে হয়েছিল সমুদ্রগর্ভে?

নাচতে নাচতে মৃত্যু, দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে করুণ পরিণতি যুবকের

বাবার খুনি ধরতে পুলিশে চাকরি মেয়ের, ২৫ বছর বাদে পাকড়াও করলেন কিলারকে

মধ্যবিত্তের কপালে ভাঁজ, উৎসবের মরসুমে আকাশ ছুঁল সোনার দাম

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর