নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ প্রতিশোধ নিতে বেরিয়েছেন ওঁরা। ওঁরা মনে করেন তাঁদের রাজা মহিষাসুর। তাঁদের দাবি, মহিষাসুর শব্দটি আসলে ঠিক নয়। এই নাম আর্যরা দিয়েছে। তাঁদের রাজা হুদুড় দুর্গা। ‘দুর্গা’ (DURGA) আসলে উপাধি। যিনি দুর্গের অধিপতি তিনিই দুর্গা। আবার অনেকে মনে করেন, তাঁরা অসুর বংশের বংশধর। তাঁদের বিশ্বাস, ছল করে আর্য নারী (দেবী) হত্যা করেছিলেন তাঁদের রাজাকে বা পূর্বপুরুষকে। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল রাজ্য। আরও বিশ্বাস, রাজা একদিন ঠিক ফিরে আসবেন। তখন হবে যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে রাজার সৈন্য হবেন তাঁরা।
বিজয়া দশমীর দিনে তাঁরা বেরোন মাথায় ময়ূরের পালক বেঁধে। নিচে থাকে ধুতি বা শাড়িকে ধুতির মত করে পরা। আর হাতে থাকে বাদ্যযন্ত্র। এই বাদ্যযন্ত্র আসলে লাউয়ের খোলা। কিছুটা ধনুকের মত দেখতে। কিছুটা নয়। ওটা সত্যিই ধনুক। আর সেই ধনুকের দড়ি টেনে টেনে বাজানো হয়। শব্দ ওঠে রঙিন লাউয়ের খোলায়। পিঠে থাকে তুণ। রঙিন লাউয়ের খোলার ভেতর থাকে তির। এ যেন যুদ্ধের জন্য ‘ছদ্মবেশ’। চলতে থাকে ঝুঁকে দুলে দুলে নাচ। এই নাচ ‘ভুয়াং’ বলে পরিচিত। তাঁদের বিশ্বাস এখন তাঁদের সংস্কৃতি। তাঁদের ঐতিহ্য।
প্রচলিত কথা, আর্যরা এলাকার দখল নেওয়ার পরে অনার্য পুরুষদের ওপর অত্যাচার চালাতেন। রক্ষা পেতেন কেবল নারীরা। তাই, অনার্য পুরুষগণ মহিলার ছদ্মবেশে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন জঙ্গলে। তাই আজও আদিবাসী পুরুষেরা মহিলার মতো সাজেন এই দিনে। গায়ে থাকে শাড়ি, হাতে চুড়ি, মাথায় ঘোমটা। এই লোকনৃত্য ‘দাঁসাই’ তাঁদের সংস্কৃতি।