সুস্মিতা ঘোষ, ব্যারাকপুর: কথাটা যদি হয় মুখরোচক খাবার তাহলে এক কথায় নাম তার বিরিয়ানি। বর্তমানে ৮ থেকে ৮০ সবার প্রিয় খাবার বিরিয়ানি। যদি আজ থেকে ২০ বছর পেছনে ফিরে তাকানো যায় তাহলে বিরিয়ানি বিষয়টি অতটাও ট্রেন্ডিং ছিল না সেই সময়ে। কিন্তু বিরিয়ানির জন্ম কিন্তু সেই রাজ রাজারদের আমল থেকে। এর আরও একটি পরিচয় বাদশাহী খাবার হিসেবে। নিজাম, হাজী, করিম-একাধিক বিরিয়ানি পরিষেবার বিখ্যাত নাম। যাদের মোটামুটি অবস্থান মুঘল, তুর্কি আমল থেকে। কিন্তু বর্তমানে বিরিয়ানির খ্যাতি আকাশছোঁয়া। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া আসার পর থেকেই বেশিরভাগ ৮ থেকে আশির প্রিয় খাবার বিরিয়ানি।
বাচ্চাদের সামনে ভাতের থালা ধরলে যতটা না দুঃখ পাবে তার থেকে বেশি আনন্দ পাবে বিরিয়ানির থালা ধরলে। আর দুদিন বাদেই পুজো। যদিও মহালয়া থেকেই পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে এই বছর। আর পুজো মানেই দেদার আড্ডা, নতুন পোশাক আর ভুরি ভোজ। পুজোর কটা দিন বাড়িতে রান্না বন্ধই বলা চলে। তবে বাইরে গিয়ে যে যাই খাক না কেন, বিরিয়ানি মাস্ট খাবেই। আর বিরিয়ানি মানেই কলকাতার পার্শ্ববর্তী জেলার একটাই গন্তব্য ব্যারাকপুর। তবে ব্যারাকপুরটা এখন বিরিয়ানিপুর নাম হয়ে গিয়েছে। কারণ একদিকে যেমন বিখ্যাত দাদা বৌদি রেস্তোরাঁ, অন্যদিকে আমিনিয়া, আর্সেনাল। যদিও দাদা বৌদির কোপে সব বিরিয়ানি হাউসই একেবারে মার খেতে থাকে সারাবছর। একমাত্র পুজোর দিনগুলি ছাড়া। দাদা বৌদির বিরিয়ানির স্বাদ যেন টেনে নিয়ে আসে দূর দুরান্তের মানুষদের। তবে পুজোর সময়ে ব্যারাকপুরের চিড়িয়া মোড়ের সব বিরিয়ানি হাউসে চলে প্রতিযোগীতা। কিন্তু নামটা যখন ব্যারাকপুর, তখন ব্যারাকপুরের আরো একটি বিখ্যাত বিরিয়ানি হাউসের নাম না বললেই নয়। তা হল ‘The Bapi Biriyani’।
বহুদিনের দোকান হলেও কিছু বছর ধরে তাঁরা বিরিয়ানি লাভারদের অন্যতম ট্রেন্ডিংয়ে আছে। সম্প্রতি আমরা চলে গিয়েছিলাম এই দোকানের পুজোর পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে। এদের বিরিয়ানির স্বাদ একেবারে দাদা বৌদির বিপরীত। এতটাই শুকনো হয় যে, ৮ থেকে আশি বা শিশুদের কাছে এদের বিরিয়ানির লোভনীয় স্বাদ অটুট। ব্যারাকপুরের কল্যানী মোড়ের কাছেই তাদের দোকান। চলতি বছর সোদপুরেও খুলেছে তাদের দোকান। এদের বিরিয়ানির বিশেষত্ব মাটন। একেবারে তুলতুলে এবং বড় পিস। সেই লোভেই বছরের নানা সময়ে এখানে দূর থেকে লোকজন এসে ভীড় জমায়। এছাড়াও স্থানীয় দের কাছে অন্যায় প্রিয় বিরিয়ানির তালিকায় দ্য বাপি বিরিয়ানিলর নাম রয়েছে। প্রতিদিন তাঁরা প্রায় ১০ হাঁড়ি তো বটেই বিরিয়ানি রান্না করেন। তবে শুধু বিরিয়ানি নয়, এদের রেস্তোরাঁয় অন্য খাবারও পাওয়া গেলেও মানুষ কিন্তু বিরিয়ানির খোঁজে আসে। পুজোর দিনগুলিতে সাড়ে ১১ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে তাঁদের দোকান, আর প্রতিদিনই লোকজন থাকে নজরে পড়ার মতো। রাত ১২ টাও থাকে সমান লাইন। তাই দেরি না করে ব্যারাকপুর স্টেশন থেকে 81 বাস বা অটো করে পৌঁছে যান কল্যাণী রোড মোড়ের নিকট দ্য বাপি বিরিয়ানি। তবে পুজো উপলক্ষ্যে কোনো নতুন রেসিপি নয়, পুরোনো রেসিপিগুলিই থাকবে ক্রেতাদের জন্যে।
