নিজস্ব প্রতিনিধি: আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা, দরজায় কড়া নাড়ছে আমাদের উৎসব দুর্গোৎসবের। আর কিছুদিনের অপেক্ষা, এরপরেই চার সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে পা রাখছেন উমা তথা দেবী দুর্গা। বাঙালি চারদিন মেতে থাকেন খুশির জোয়ারে। চারদিন সব দুঃখ কষ্ট ভুলে একেবারে খুশির হাওয়া বইতে থাকে সবার মনে। তবে দুর্গাপুজোর সময়ে শহরাঞ্চলের পাশাপাশি বাংলার গ্রাম বাংলাও দারুণভাবে সেজে ওঠে। হতে পারে সেখানে অত আলোকসজ্জায় পরিপূর্ণ থাকে না বা আড়ম্বর থাকে না, তবুও গ্রাম বাংলার পুজোতেও রয়েছে আলাদা ঐতিহ্য। যাই হোক, আজ আমরা আলোচনা করব এমনই একটি মফস্বলের বনেদি পুজো নিয়ে। জলঙ্গি নদীর তীরে অবস্থিত নদিয়ার জেলা সদর কৃষ্ণনগর। জানা যায়, কৃষ্ণনগরের নামকরণই হয়েছে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের নাম অনুযায়ী। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজত্বকালে নির্মিত কৃষ্ণনগরের এই রাজবাড়ইটি এখনও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের একটি স্থান। বর্তমানে এই গৌরবের রাজবাড়ির অবশিষ্টাংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার জীর্ণ কাঠামো বর্তমানে বিদ্যমান।
সারা বছরে এই রাজ বাড়িতে প্রবেশের নিষেধ থাকলেও, পুজোর চারটি দিন সদর দরজা খুলে দেওয়া হয় এই রাজবাড়ির। আর কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির বিরাট পুজো মণ্ডপ এই রাজবাড়ির অন্যতম দর্শনীয় সম্পদ। শুধু পুজো মণ্ডপেই নয়, পুজো মণ্ডপের থাম, খিলান ইত্যাদিতেও রাজকীয় ছাপ লক্ষ্য করা যায়।
মুলত দোল পূর্ণিমার পর দ্বিতীয় একাদশী অথবা চৈত্র মাসের শুক্লা একাদশী তিথিতে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ী প্রাঙ্গণে এক বিরাট মেলা বসে। যাকে বলে ‘বারোদোলের মেলা’। আর এই মেলার কূল বিগ্রহ হলেন বড় নারায়ণ। ১২টি কৃষ্ণের বিগ্রহ রাজবাড়ির দুর্গা দালানের পাশে মণ্ডপ করে কাঠের সিংহাসনের সাজিয়ে রাখা হয়। সঙ্গে সাধারণ মানুষকে তিন দিনের দর্শন করতে দেওয়া হয়। তবে বছরের বিশেষ কিছুদিন ছাড়া রাজবাড়ির অন্দরমহলে ঢোকা নিষেধ। শুধুমাত্র বারোদোলের মেলা, দূর্গাপূজা, জগদ্ধাত্রী পুজো, এবং ঝুলনযাত্রায় রাজবাড়ি তে ঢুকতে দেওয়া হয়।