নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপি সহ বিরোধীরা কলকাতা পুরনিগমের পুরনির্বাচনে নির্বিঘ্নে করাতে বার বার কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাওয়াল করে এসেছে। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশন আস্থা রেখেছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের ওপরেই। সেই মর্মে কমিশন হলফনামাও জমা দিয়েছে আদালতে। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে কিবা সুপ্রিম কোর্ট কিবা হাইকোর্ট উভয়েই কলকাতার পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার পক্ষে কোনও রায় দেয়নি। আদালতের এই অবস্থানকে শাসক তৃণমূল স্বাগত জানালেও চাপে ফেলে দিয়েছে বিজেপি সহ বিরোধী পক্ষকে। তবে কমিশনও নির্বিঘ্নে ভোট করাতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেই মর্মে এদিন কমিশন একগুচ্ছে নির্দেশিকাও জারি করে দিয়েছে। তার মধ্যে সব থেকে চাঞ্চল্যকর পদক্ষেপ হল, যে সব নেতা, মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিরা সরকারি নিরাপত্তা পান তাঁরা ভোটের দিন নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে নিজের বুথ ও পার্টি অফিস ছাড়া কথাও যেতে পারবেন না, এই নির্দেশিকাটি। পোলিং এজেন্টকে বুথেরই হতে হবে। বিরোধীদের দাবি খারিজ। আজ থেকেই রুট মার্চ শুরু হয়েছে।
আগামী রবিবার কলকাতাবাসী বুথমুখো হবে পুরভোটে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার জন্য। সেই ভোটদানের প্রাক্কালে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই যেমন শহরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা হবে যান চলাচলও। এর পাশাপাশি কমিশন জানিয়েছে, রবিবার কলকাতার সব শপিং মল, বেসরকারি অফিস ও সব ধরনের বড় দোকান। সেই সঙ্গে এদিন সন্ধ্যা থেকেই শহরের সব মদের দোকানও বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কমিশনের তরফে পুলিশকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এদিন সন্ধ্যা থেকেই শহরে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চালাতে হবে নাকা তল্লাশি। উদ্ধার করতে হবে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ। শহরে ঢুকতে চাওয়া সব ধরনের গাড়িতেই চালাতে হবে নাকা তল্লাশি। এর পাশাপাশি যেখানে যেখানে জটলা হবে সেখানে সেখানে মানুষের পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। মূলত বহিরাগতরা যাতে এই সময়ে শহরে ঢুকতে না পারে ও ভোটের দিন যাতে কোনওরকমের গণ্ডগোল বা ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন করতে না পারে সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
কমিশন এদিন জানিয়েছে, কলকাতা পুরনিগমের ১৬টি বোরোতে এবারে মোট ৫৮৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বা পোলিং স্টেশন থাকছে। মোট বুথের সংখ্যা ৪ হাজার ৯৫৯টি। এদের মধ্যে ৭৮৬টি বুথকে স্পর্শকাতর ও ১১৩৯টি বুথকে উত্তেজনাপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিন দুপুর থেকেই কলকাতার ৪টি এলাকায় শুরু হয়ে গিয়েছে পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর রুটমার্চ। কমিশন যে সব এলাকায় ভোটের দিন অশান্তির আশঙ্কা করছে সেই সব এলেকাতেই এই রুটমার্চ করানো হচ্ছে যাতে সেখানকার মানুষেরা নির্ভয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আগামী ১৯ তারিখ বুথে গিয়ে ভোটদান করতে পারেন। পাশাপাশি অশান্তি ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী ও র্যাফও রাখা হচ্ছে শহরে। পাশাপাশি এদিন থেকেই শহরের বুকে থাকা সব হোটেল, গেস্টহাউস ও রিসর্টগুলিতে কড়া নজরদারি করতে হবে যাতে কোনও ভাবেই বহিরাগতরা সেখানে ভিড় করতে না পারে।