নিজস্ব প্রতিনিধি: চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ টলিপাড়ার একজন জুনিয়র শিল্পী সায়ন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। পোস্ট অফিস এবং খাদ্য দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বহু মানুষের থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত অভিনেতা থাকেন মালদহ জেলায়। বহুদিন ধরেই নজরে রেখেছিলেন প্রতারিত হওয়া ব্যক্তির পাড়ার বাসিন্দারা। বুধবার তাঁকে হাতের নাগালে পেয়ে চটজলদি আটক করেন সবাই। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তেই টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন ওই অভিনেতা। সাফাই দিতে গিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যের এক প্রভাবশালী নেতার কথায় তিনি এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে এখন তিনি এলাকার বাসিন্দাদের হাতে বন্দি। যতক্ষণ না তিনি টাকা দিচ্ছেন তাঁরা তাঁকে ছাড়বে না বলেই জানিয়েছে। এলাকায় গন্ডগোল শুরু হলে তৎক্ষণাৎ জাঙ্গিপাড়া থানার পুলিশ পৌঁছয় সেখানে।
জাঙ্গিপাড়ার এক প্রতারিত বাসিন্দা জানিয়েছেন, পোস্ট অফিসে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ওই অভিনেতা তাঁর কাছ থেকে ৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। ফেসবুকেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছে সায়নের। তাঁদের সম্পর্কও দারুণ ছিল, একে অপরের বাড়িতে যাওয়াআসা করতেন তাঁরা। সেই সূত্রেই সায়ন আশেপাশের পোস্ট অফিসে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন প্রতারিত ব্যক্তিটির থেকে। এছাড়াও আরও চার ব্যক্তির থেকে টাকা নিয়েছেন সায়ন। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সবার থেকে টাকা নিলেও চাকরি দিতে পারেন নি কাউকে। বিশ্বজিতের বাবা বলেন, জমি বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছেন তিনি। ওই গ্রামেরই আর এক বাসিন্দা সুমন কুন্ডুর অভিযোগ, খাদ্য দফতরে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে তাঁর থেকেও ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন সায়ন। প্রথমে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা চাইলে পরে ৩০ হাজার টাকায় রাজি হয়ে গিয়েছিলেন সায়ন।
প্রতারিত ওই ব্যক্তিটির কথায়, বুধবার অভিনেতাকে টাকা দেওয়ার টোপ দেখিয়েই জাঙ্গিপাড়ায় ডেকে আনা হয়। এরপর তাঁর বাড়িতে পৌঁছতেই সায়নকে আটকে রেখে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ শুরু করেন। সায়ক বাংলা টেলিভিশন ধারাবাহিকে জুনিয়র শিল্পী। কয়েকটি ধারাবাহিকে কাজ করেছেন। গ্রামবাসীদের ফাঁদে পড়ে অভিনেতা দাবি করেছেন, রাজ্যের এক শাসকদলেন নেতার কথাতেই তিনি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তুলেছেন। ওই নেতাও তাঁকে টলিউডে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এই কাজ করতে বলেছিলেন। কারণ টালিগঞ্জ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন বড় মাথা তিনি। তাই যা চাকরি দেওয়ার নাম করে যা টাকা পেয়েছিলেন তিনি, সবটাই ওই নেতার হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে সায়নের এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের একটাই বক্তব্য, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, তাঁরা টাকা ফেরত চান।