নিজস্ব প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে শেষ ভাষণে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সংসদীয় এলাকা ঘাটালবাসীকে ধন্যবাদ জানালেন টলিউড সুপারস্টার দেব। তবে কী ১০ বছরের রাজনৈতিক জার্নি শেষ করলেন দেব? বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে তারকাদের আনাগোনা ভরপুর। টলিউডের একাধিক তারকা এখন রাজ্যের শাসকদলের একটি অংশ। ২০১৪ সাল থেকেই ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিনেতা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে কাটিয়ে ফেললেন ১০ টা বছর। প্রায় তিনবার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছেন তিনি। কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন! ২০২৪ সালে তিনি লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়াবেন না, এমন জল্পনা মাস কয়েক ধরেই রাজনৈতিক অন্দরে চলছিল! এদিকে দিন কয়েক আগে ঘাটালের তিনটি প্রশাসনিক পদ থেকে ইস্তফা দেন দেব। তখনই তাঁর সাংসদ পদ ছাড়ার জল্পনা তুঙ্গে ওঠে! কিন্তু জল্পনা উস্কে দিয়েও মুখে কুলুপ আঁটেন তারকা সাংসদ।
মাঝে আবার কালিঘাটে একটি দলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দেবের কাজের প্রশংসা করেন। তখনই পরিষ্কার হয় এত তাড়াতাড়ি তৃণমূল ছাড়ছেন না দেব। কিন্তু গতকাল নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিজে লোকসভায় তাঁর বরাদ্দ আসনের ছবি পোস্ট করে অভিনেতা লেখেন, ‘আর মাত্র কিছুক্ষন অপেক্ষা।’ ব্যাস, এরপরেই দেবের পদত্যাগের জল্পনা আরও জোরালো হয়। বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশন শেষে সংসদের একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দেব লিখলেন, ‘সংসদে আমার শেষ দিন। ধন্যবাদ দিদি। ধন্যবাদ ঘাটালবাসীকে।’ তবে কী সাংসদ পদ ছাড়লেন দেব? না তা এখনও ধোঁয়াশায়! তাহলে কী ভোটে না দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন অভিনেতা? তাও এখনও স্পষ্ট নয়।বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিনেতা সংসদে তিনি বলেন, তিনি থাকুক কি থাকুক, ঘাটাল তাঁর হৃদয়ে থেকে যাবে সারাজীবন। তাঁকে ১০ বছর সাংসদ হিসাবে কাজ করতে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। এটাই যে তাঁর সাংসদ ভবনে শেষ বক্তৃতা, তিনি তাঁর কথার আরব-কায়দাতেই বুঝিয়ে দিলেন! এদিন অধিবেশন শেষে নতুন সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেব বলেন, ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়ে যাবতীয় বক্তব্য এক বছর আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
তাঁর কথায়, ঘাটাল মহকুমায় প্রতিবছর বর্ষায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা রুখতে মাস্টার প্ল্যানের কথা ১০ বছর ধরে চলছিল কেন্দ্রের সঙ্গে। প্রতিবার ভোটের আগেই এই ইস্যুটি সামনে আসে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অর্থ প্রদান করেনি। সবটাই রাজ্য সরকার করেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া ১৬০০ কোটি টাকার কথা উঠলে দেব তা উড়িয়ে স্পষ্ট বলেন, কেন্দ্র কোনও টাকা দেয়নি। তবে কী তিনি সাংসদ পদ ছাড়লেন? না এখনও তা স্পষ্ট নয়! এদিকে রাজ্যের এক মন্ত্রীর উপর দেব ক্ষুব্ধ নাকি শোনা গিয়েছিল। তাঁর ছবি নন্দনে জায়গা না পাওয়া নিয়েই সেই ক্ষোভের সূত্রপাত হয়। এছাড়াও জল্পনা যে, গরু পাচার মামলার তদন্তের দেবকে ডেকেছিল সিবিআই। অভিযোগ উঠেছিল যে, গরু পাচারের টাকা দেব নিজের ছবিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। তাহলে কি সেই তদন্ত এড়াতেই ভোটে দাঁড়াতে চান না দেব?