নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ ১১ ডিসেম্বর, আজকের দিনেই ১৯২২ সালে জন্ম হয়েছিল মহান প্রতিভাবান অভিনেতা দিলীপ কুমারের। ১০০ বছর জন্মবার্ষিকী আজ মহান অভিনেতার। তাঁর সফর শেষ হয়েছিল ২০২১ সালের ৭ জুলাই। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে যায় ভারতীয় বিনোদনের এক যুগের। বলিউডের অন্যতম শীর্ষ এবং প্রতিভাবান অভিনেতা ছিলেন দিলীপ কুমার। তাঁর কেরিয়ারে রয়েছে বহু ব্লকবাস্টার হিট চলচ্চিত্র, একাধারে পদ্মশ্রী প্রাপ্ত, জাতীয় পুরস্কার প্রাপক এই অভিনেতার মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তাঁর মৃত্যুতে আজও শোকস্তব্ধ ভারতীয় বিনোদন মহল। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। শুধু হিন্দি নয়, অনেক বাঙালি অভিনেতাদের সঙ্গেও তাঁর দুর্দান্ত রসায়ন ছিল।
কিন্তু জানেন কী, কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গেও দিলীপ কুমারের দারুণ বন্ডিং ছিল, প্রত্যেক ভারতীয়র মতো, তিনিও লতা মঙ্গেশকরের অন্ধভক্ত ছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা একবার একটি যুগল গানও গেয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে লতাজি যখন সুরকার অনিল বিশ্বাসের সঙ্গে একটি রেকর্ডিংয়ের জন্য লোকাল ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন তখনই দিলীপ কুমারের সঙ্গে তাঁর প্রথমবার দেখা হয়েছিল। তখন অনিল বিশ্বাস লতাজিকে একজন অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল মহারাষ্ট্রীয় গায়িকা হিসেবে দিলীপ কুমারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তখন দিলীপ কটূক্তি করে বলেছিলেন, “কেউ মহারাষ্ট্রীয় গায়কদের উর্দু উচ্চারণে ডাল-ভাতের গন্ধ পেতে পারে।”
অভিনেতার মুখে এই মন্তব্য শুনে লতাজি রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। তখন লতাজী নিজের জন্যে একজন উর্দু কোচ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন এবং নিজের উর্দু ভাষাকে আরও সুন্দর করে তোলার জন্য অতিরিক্ত কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন। শেষমেশ লতাজি সফল হন। দিলীপ সাহেবের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ ছিলেন তাঁকে এই চ্যালেঞ্জ দেওয়ার জন্য। কারণ কিংবদন্তি অভিনেতার জন্যই লতাজী উর্দুতে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।
এরপর ১৯৫৭ সালে দিলীপ কুমার- হৃষিকেশ মুখার্জির মুসাফির-এর জন্য লতাজি গান গাওয়ার বিরল সুযোগ পান। যার সুর করেছিলেন সলিল চৌধুরী। তবে একসময় গুঞ্জন উঠেছিল যে, লতাজীর সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে দিলীপ সাহেবের কথা বলা বন্ধ ছিল। কিন্তু এই বিষয়টি একেবারেই মিথ্যা প্রচার। তাঁদের মধ্যে পারস্পরিক স্নেহ এবং শ্রদ্ধাশীল সম্পর্ক ছিল। ১৯৭৩ সালে লতাজি যখন অ্যালবার্ট অডিটোরিয়ামে তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক কনসার্ট করেন, তখন দিলীপ সাহেব তাঁর সঙ্গে ছিলেন এবং মঞ্চে তাঁর চমৎকার প্রশংসা করেছিলেন।
তবে হ্যাঁ, এটা সত্যি যে লতাজি বহু বছর ধরে দিলীপ কুমারের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। কিন্তু তাঁর কারণ অন্য ছিল। যদিও সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। বলাই বাহুল্য, ২০১৩ সালে অনেক বছর পর তাঁদের দেখা হয়েছিল। যদিও তখন শারীরিক অসুস্থতার জন্যে দিলীপ কুমার খুব কমই কাউকে চিনতে পারতেন। কিন্তু তিনি তাঁর ছোট বোন অর্থাৎ লতা মঙ্গেশকরকে চিনতে ভুল করেননি।