নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঙালি স্বার্থপর জাতি। নিজের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার তাগিদ জাতির খুব কম। ধীরে ধীরে বাঙালির ঐতিহ্য যেন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। আইকনিক তারকাদের বাড়ি ভেঙে বানানো হচ্ছে বড় বড় প্রাসাদ। আগেই খবর হয়েছিল যে, পরিচালক মৃণাল সেনের বাড়ি বিক্রি হচ্ছে খুব শীঘ্রই। এবার প্রোমোটিং হয়ে গেল, বাংলার কিংবদন্তি গায়িকা গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি। বাংলা গানের জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ষাটের দশক থেকেই তাঁর কণ্ঠের যাদু মাতিয়ে রেখেছে গোটা বাংলাকে। তাঁর কন্ঠ বাঙালির ইমোশন। কণ্ঠ দিয়েছেন একাধিক কালজয়ী গানে। গতবছর দীর্ঘ অসুস্থতার পর মারা গিয়েছেন তিনি। আর তাঁর মৃত্যুর এক বছর যেতে না যেতেই ভাঙা পড়ল তাঁর লেক গার্ডেন্সের বাসভবন, যা ভেঙে তৈরি হবে বহুতল আবাসন। এই বাড়িতেই ‘গীতশ্রী’ ঘর-সংসার পেতেছিলেন কবি শ্যামল গুপ্তের সঙ্গে।
সৃষ্টি করেছেন একের পর এক কালজয়ী গান। ‘স্বপ্ন ভরা অন্ধকারে’ থেকে শুরু করে ‘মোর গানের এই বীণা’, ‘তার শেষ রাগিনী সুরে-সুরে এল ভেসে নয়ন ধারে,’, ‘চন্দন পালঙ্কে শুয়ে একা-একা কী হবে-সহ একাধিক গান। তিনি যে বাঙালির মেলোডি কুইন ছিলেন। তাঁর সেই স্মৃতি বিজড়িত বাসভবন টি আজ যেন শহরের কাছে অকেজো। এর আগেও বহু বিখ্যাত ব্যক্তির বাড়ি, যা হেরিটেজ সম্পদ হওয়ার কথা, তা ভেঙে বহুতল গড়েছেন সমাজের নামী-দামী মানুষরা। এবার সেই তালিকায় যোগ হল, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাসভবন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানাতে আগ্রহী হননি। কিংবদন্তী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিমেদুর বাড়ির ভাঙন ভক্তদের রীতিমতো ক্ষুব্ধ করেছে। আজ সবটাই স্মৃতির অতলে।
এই বিষয়ে সংস্কৃতি গবেষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমাদের সমাজে তাঁর কোনও চিহ্ন নেই। এই যে নেই, এটা তো জাতীয় অপরাধ। বিলেতে শার্লক হোমসের মতো কল্পিত চরিত্রের জন্যও আলাদা মিউজিয়াম থাকে। কিন্তু এখানে মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, শচীন দেব বর্মণ এঁরা অবহেলিত থাকেন।”