নিজস্ব প্রতিনিধি: কী কাণ্ড! প্রচারে বেরিয়ে নিজের দলের কর্মীর কাছেই রীতিমতো অপদস্থ হয়ে মুখ কাচুমুচু করে গাড়ি থেকে নেমে গেলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। আর তাঁকে গাড়ি থেকেই নামিয়ে দেওয়ার স্পর্ধা দেখালেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। একই দলের হয়ে কর্মী এমন বিবাদ, অহরহ দেখতে পাওয়া মুশকিল। শুরু হয়ে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচন। আগামিকাল দ্বিতীয় দফার ভোট। বাংলার তিনটি রাজ্যে সকাল থেকেই শুরু হবে ভোটপর্ব। রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, এবং দার্জিলিংয়ে ভোট।
ভোটের আগেই সর্বত্র জমিয়ে চলছে শাসক-বিরোধী দলগুলির প্রচারপর্ব। মানুষের কাছাকাছি পৌঁছতে কোনও কসরত ছাড়ছেন না প্রার্থীরা। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে কোন্নগরের স্টেশন রোডে তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে থেকে শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। উদ্দেশ্য, কোন্নগর নবগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নিবিড় জনসংযোগ চালাবেন তাঁরা।
এদিন হুডখোলা গাড়িতে আরও কয়েকজনের পাশাপাশি কল্যাণের সঙ্গেই দেখা গিয়েছিল উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিককে। কিন্তু প্রচার শুরুর আগেই কাটল তাল। কাঞ্চন মল্লিককে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলেন খোদ শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ। কারণ হিসেবে জানালেন, কাঞ্চনকে দেখলেই গ্রামের মহিলারা ‘ভীষণ রিয়্যাক্ট’ করছেন। তাই তিনি কাঞ্চনকে তাঁর সঙ্গে গ্রামে প্রচারে নিয়ে যেতে পারবেন না, অগত্যা মনমরা হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন কাঞ্চন মল্লিক, তবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি। কল্যাণ শ্রীরামপুরে দীর্ঘদিনের সাংসদ, তাই নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে দিনভর প্রচার চালাচ্ছেন। তাই কল্যাণ চাননি তাঁর প্রচার গাড়িতে থাকুক কাঞ্চন। এরপরই উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণের প্রচার গাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। দলীয় সূত্রের খবর, কাঞ্চন গাড়ি থেকে নেমে একটুকুও দাঁড়াননি সেখানে, কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে, কল্যাণ বলছেন, উনি মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন কি হননি, তিনি জানেন না। এর আগেও কাঞ্চনকে নিয়ে তিনি প্রচার করেছেন। আর এখন যখন তিনি তাঁর সঙ্গে প্রচারে বেরোচ্ছেন তখন গ্রামের মহিলারা ভীষণ রিয়্যাক্ট করছেন। তাই আগেই কল্যাণ জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে গ্রামে না আসতে। আর কাঞ্চন তো তাঁর সঙ্গে না থেকেও প্রচার করতে পারেন নিজের মতো।
যেহেতু একই দলের মানুষ তাঁরা। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি কাঞ্চন। প্রসঙ্গত, কাঞ্চন টলিউডের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। কিন্তু বর্তমানে ব্যক্তিগত কারণে শিরোনামে আছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর খুব সম্প্রতি আবাও বিয়ে করেছেন অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন, অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজকে। এই নিয়ে কম আলোচনা-সমালোচনা হয়নি। কাঞ্চনকে নিয়ে কটাক্ষের ঝড়ও চলেছে অনেক। প্রাক্তন দুই স্ত্রীকে ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু একজনের উপর বেশিদিন মন থাকে না তাঁর। দ্বিতীয় স্ত্রী পিঙ্কির সঙ্গেও কম ঝামেলা হয়নি। তা নিয়েই কল্যানের এলাকার মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বলে দাবি বিদায়ী সংসদের। যদিও কল্যাণ স্পষ্ট করেননি, গ্রামের মহিলারা ঠিক কোন কারণে কাঞ্চনকে নিয়ে আপত্তি করছেন? আবার অনেকে ধারণা, কাঞ্চনের জনপ্রিয়তা বেশি তাই তিনি থাকলে কল্যাণকে কেউ পাত্তাই দেবে না, তাই হয়তো তিনি এদিন প্রচারে কাঞ্চনকে রাখতে চাননি।