নিজস্ব প্রতিনিধি: বলিউডের প্রথম সারির গায়ক কিশোর কুমার, বলিউড-টলিউড মিলিয়ে অজস্র মাইলস্টোন সৃষ্টিকারী গান উপহার দিয়েছেন তিনি ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রিকে। তাঁর গানের প্রসার আগামী কয়েক প্রজন্মের কাছে একইরকম নতুন থাকবে। যাই হোক, বাবার জন্যে নয়, কিংবদন্তি গায়ক কিশোর কুমারের ছেলে অমিত কুমারও সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রচেষ্টায় চলচ্চিত্র জগতে নিজের ছাপ ফেলেছেন। তিনিও বলিউড-টলিউড মিলিয়ে একাধিক গান উপহার দিয়েছেন সঙ্গীতমহলকে। বলিউডে ‘বড়ে আচ্ছে লাগতে হ্যায়’, ‘আতি রাহেঙ্গি বাহারেইন’, ‘কেহ দো কে তুম হো’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় গান গেয়েছেন তিনি। তবে শ্রোতারা মূলত অমিতকে প্রয়াত বাবার উত্তরাধিকারী হিসেবেই গন্য করেন। কিন্তু জানেন কী, একটা সময় অমিত তাঁর বাবাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
১৯৮১ সালে অমিত কুমারের জন্য একটি উজ্জ্বল বছর ছিল। কারণ, সেই সময়ে তাঁর কণ্ঠ এবং অভিনেতা কুমার গৌরবের অভিনয় একত্রিত হয়ে, একাধিক প্রেমের গান হিট হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল, R.D বর্মনের সঙ্গীত এবং আনন্দ বক্সীর লেখা, ‘দেখো ম্যায় দেখা হ্যায় ইয়ে এক স্বপ্ন’, ‘ইয়ে লড়কি জারা সি দিওয়ানি লাগতি হ্যায়’ এবং ‘ইয়াদ আ রাহি হ্যায়’-এর মতো হিট ট্র্যাকগুলি। যদিও কিশোর কুমার প্রচুর সেরা পুরুষ প্লেব্যাক গায়কের পুরস্কার পেয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, আজ অবধি, কিশোর কুমার ২৮ টি মনোনয়ন সহ সর্বাধিক মনোনীত গায়কের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।
১৯৮২ সালে, প্রেমের গল্প ‘ইয়াদ আ রাহি হ্যায়’-এর জন্য অমিত কুমার, প্রেম গীতের ‘হোঁটন সে ছু লো তুম’-এর জন্য জগজিৎ সিং, এক দুজে কে লিয়ে ছবির ‘তেরে মেরে বীচ ম্যায়’-এর জন্য এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যম এবং কিশোর কুমার মনোনীত হয়েছিলেন। তবে কিশোর কুমার ছেলের সাফল্যে নিজেও অনেক এনজয় করেছেন। ২০২০ সালে একটি মুম্বই সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে অমিত শেয়ার করেছিলেন, “আমার মনে আছে যে আমি রাজকোটে পারফর্ম করছিলাম, সেখানে একটি শো চলছিল। তখন মোবাইল ফোন ছিল না। আমার বাবা আমাকে মুম্বই থেকে ফোন করেছিলেন। ফোন করে তিনি বলেন, ‘অভিনন্দন, তুমি সবেমাত্র ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছ। তোমার কণ্ঠ আমাকেও হারিয়ে দিয়েছে, আমি এই কথা শুনে খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু আমার জন্য সবচেয়ে বড় মুহূর্ত ছিল, তিনি যখন আমাকে মঞ্চে পুরস্কারটি দিতে উঠেছিলেন। বাবার কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া, সত্যই একটি দুর্দান্ত মুহূর্ত ছিল।” অমিত স্মরণ করেছেন যে, তিনি যখন কিশোর কুমারের কাছ থেকে তাঁর পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন তখন, গোটা অডিটোরিয়াম দাঁড়িয়ে তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে অমিত বলেন, “আমার বাবা আমাকে অ্যাওয়ার্ড দিতেই পুরো অডিটোরিয়াম উঠে দাঁড়ালো। তখন আমি আমার চোখ অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। সবাই হাততালি দিচ্ছিল। এটাই ছিল সবচেয়ে বড়, তিনি আমাকে পুরষ্কার দিয়েছেন!”