নিজস্ব প্রতিনিধিঃ করোনার করাল থাবা থেকে মুক্তি পেয়ে একদিকে যখন একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছে ভারত, আমেরিকা, পাকিস্তানের মতো একাধিক দেশ ঠিক তখনই করোনার নতুন ধেউয়ে কার্যত বেসামাল অবস্থা দক্ষিণ কোরিয়ার। জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি এশিয়ার এই দেশে নতুন করে থাবা বসিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। দিন দুয়েক আগেই জানা যায়, করোনার সংক্রমণ এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে এই দেশে যে প্রতিদিন প্রায় ৪ লক্ষ করে নতুন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। কিন্তু সম্প্রতি জানা যাচ্ছে যে গত দুদিনে এই সংখ্যাটি আরও ২ লক্ষ বেড়েছে। বুধবার সকালে প্রকাশিত বিশ্বব্যাপী করোনা বুলেটিন জানান দিচ্ছে, গত একদিনে দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট ৬ লক্ষ ২১ হাজার ৩২৮ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। জানা যাচ্ছে, এটাই এখনও পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী দৈনিক সংক্রমণের রেকর্ড। দক্ষিণ কোরিয়ার আগে বিশ্বের কোনও দেশেই একদিনে এত লোক একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়নি।
তবে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যতটা ভয়ঙ্কর এই দেশে, দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা এখনও পর্যন্ত এতটা ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছতে পারেনি। জানা যাচ্ছে, গত একদিনে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪২৯ জনের। যদিও আগের থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেকটাই বেড়েছে মৃত্যুর হার। একদিনে কার্যত দ্বিগুণ হয়েছে মৃতের সংখ্যা, কিন্তু তারপরেও এই মুহূর্তে দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়ে রয়েছে ১১হাজার ৪৮১।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, এই মুহূর্তে দেশে উল্কার গতিতে করোনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় পৌঁছায়নি। কারণ এখনও পর্যন্ত যারাই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে সিংহভাগেরই সামান্য উপসর্গ রয়েছে। অধিকাংশই আবার উপসর্গহীন। এদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১১৫৯ জন। এর পাশাপাশি জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় হাসপাতাল এবং তাতে ICU-এর সংখ্যা অনেক বেশী। মূলত সেই কারণেই এই দেশের মৃত্যুহারকে এখনও পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে সংক্রমণ ঠেকাতে শুরু হয়েছে র্যাপিড টেস্ট। কোরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এই দেশ শুধুমাত্র র্যাপিড টেস্টের জন্য খরচ করেছে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন ডলার। এর পাশাপাশি এই দেশ করোনার টিকাকরণের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে। চলতি মাসের প্রথমে যখন এই দেশের ওপর করোনার এই নতুন ঢেউ আছড়ে পড়ে তার আগেই দেশের ৯০ শতাংশ ষাটোর্দ্ধ নাগরিককে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়ে গিয়েছে।