নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাই স্বামীকে সুস্থ করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে তিনি জ্যোতিষীর(Astrologer) দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মিত্র ভেবে ধরেছিলেন তাঁর হাত। ভেবেছিলেন স্বামীকে সুস্থ করে তুলবেন সেই জ্যোতিষী। তাই রেখেছিলেন আস্থা। করেছিলেন বিশ্বাসও। কিন্তু সেই আস্থা, ভরসা আর বিশ্বাসের চরম সুযোগ নিলেন সেই জ্যোতিষী। কার্যত লুটেপুটে খেলেন তাঁকে। যদিও শেষরক্ষা হল না। ব্ল্যাকমেইল শুরু হতেই জ্যোতিষীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। আর সেই অভিযোগেই গ্রেফতার হলেন জ্যোতিষী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে খাস কলকাতার বুকে। অভিজিৎ ঘোষ(Avijit Ghosh) নামে ওই জ্যোতিষী গ্রেফতার হয়েছেন চিত্পুর থেকে।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলা ও তাঁর স্বামী মাসদেড়েক আগে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে জ্যোতিষী সুভাষ ওরফে অভিজিৎ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই সময় অভিজিৎ দাবি করেন, তাঁর স্বামী কার্যত মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে। তাঁকে বাঁচাতে হলে হাতে পরাতে হবে দামী রত্নের আংটি। সেই সঙ্গে করতে হবে যজ্ঞ। কার্যত কিছুটা চাপে পড়েই তাতে রাজী হয়ে যান ওই দম্পতি। এরপরেই তাঁদের লক্ষাধিক টাকার পাথর কেনানোর পাশাপাশি নির্যাতিতাকে তারপীঠ ও ডায়মন্ডহারবার যেতে বাধ্য করেন অভিজিৎ। বলা হয়েছিল তারাপীঠে(Tarapith) হবে যজ্ঞ আর ডায়মন্ডহারবারে(Daimond Harbour) গঙ্গার ধারে হবে পুজো। অভিযোগ তারাপীঠেই ওই মহিলাকে মদের সঙ্গে নেশার ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ায় অভিজিৎ। মহিলা সেই পানীয় খেয়ে বেহুঁশ হতেই তাঁকে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও তোলার পাশাপাশি তাঁকে ধর্ষণ করে অভিজিৎ। ডায়মণ্ডহারাবারেও সেই একই ঘটনা ঘটে। কিন্তু তারপরে অভিজিৎ আবারও দিঘা(Digha) যাওয়ার দাবি করলে নির্যাতিতা সেখানে যেতে অস্বীকার করেন।
অভিযোগ সেই অস্বীকারের জেরেই অভিজিৎ ওই নির্যাতিতাকে রীতিমত ব্ল্যাকমেইলিং করা শুরু করে। তাঁর নগ্ন ছবি ও ধর্ষণের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করে অভিজিৎ। এরপরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই শেষে পুলিশ গ্রেফতার করে অভিজিতকে। চিৎপুর থানার পুলিশ অভিজিতকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি তার কাছ থেকে নকল রত্ন পাথর ও বেশ কিছু অশ্লীল ভিডিও পেয়েছে। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।