নিজস্ব প্রতিনিধি: এ কোচিং এমন কোচিং ভুলবে না কেউ এ জনমে। মুখে মুখে ঘুরত এই ট্যাললাইনই। কেননা সেই কোচিংয়ে দেওয়া হত আইপিএস ও আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতির শিক্ষণ। আর সেটাও মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে। কোচিং সেন্টার খাস সল্টলেকে(Saltlake)। স্বাভাবিক ভাবেই পড়ুয়াদের মেলা। সেই কোচিং সেন্টারেই চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সল্টলেকেরই এক তরুণী। পরে তিনিই অবশ্য বিধাননগর মহিলা থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। জানিয়েছেন সেই কোচিং সেন্টারে তাঁর অভিজ্ঞতা এমন হয়েছে যা তিনি সত্যিই এই জন্মে আর ভুলতে পারবেন না। কেননা আলাদা করে ক্লাস নেওয়ার কথা বলে সেই কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষক তাঁকে দিনের পর দিন ধরে ধর্ষণ করে গিয়েছে। যদিও সেই তরুণীর অভিযোগে ঘটনার তদন্তে নেমে মধ্যপ্রদেশ(Madhya Pradesh) থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে বিধাননগর মহিলা থানার পুলিশ(Police)।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম প্রেয়স সিং সেঙ্গার। সে সল্টলেকের ওই কোচিং সেন্টারের(Coaching Centre) শিক্ষক। অভিযোগ, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর প্রেয়স ওই তরুণীকে সল্টলেকের সি কে ব্লকের ১১৪ নম্বর বাড়িতে ঢেকে পাঠায়। সেই বাড়িতে গিয়ে ওই তরুণী দেখে সেটি একটি গেস্ট হাউস। যদিও সেই গেস্ট হাউসে কোন বিশেষ কোচিং দেবেন ওই শিক্ষক তা নিয়ে ওই তরুণীর মনে কোনও প্রশ্ন আসেনি। কেন আসেনি সে প্রশ্নের উত্তরও মেলেনি। অভিযোগ সেখানেই ওই শিক্ষক ধর্ষণ করে ওই তরুণীকে। এখানেও উঠছে প্রশ্ন। শিক্ষক তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে সেটা দেখে কেন চ্যাঁচামেচি জোড়েননি ওই তরুণী? সেই উত্তরও মেলেনি। তরুণীর অভিযোগ, সেদিনের ঘটনা ভিডিও রেকর্ডিং করে পরে তা দেখিয়ে ব্ল্যাক মেইলিং শুরু হয়। বলা হয় কথা শুনে না চললে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হবে। সেই ভয় দেখিয়েই একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় ওই তরুণীকে। তার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই তরুণীর পরিবার বিষয়টি জানতে পারে ও গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিধাননগর মহিলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। যদিও তারপর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল ওই শিক্ষক। শেষে তার মোবাইলের ‘টাওয়ার লোকেশন’-এর সূত্র ধরে মধ্যপ্রদেশে হাজির হয় বিধাননগর মহিলা থানার একটি টিম। এরপর গোয়ালিয়র(Gwalior) থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এখন তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে বিধাননগরে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিনই তাকে বিধাননগর মহকুমার আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তাকে ৩ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। যদিও সল্টলেকের ওই কোচিং সেন্টারের কিছু পড়ুয়ার দাবি, ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ওই শিক্ষকের। বিয়ে করতে না চাওয়াতেই ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে।