নিজস্ব প্রতিনিধি: বেশ কয়েক মাস ধরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্য ভাতা বা DA’র দাবিতে আন্দোলন(DA Movement) করে চলেছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। সেই আন্দোলনের মাঝেই হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘী বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন(Sagardighi Bye Election)। তাতে দেখা গিয়েছিল পোস্ট্যাল ব্যালটে(Postal Ballot) বিরোধীদের থেকে বেশ পিছিয়ে পড়েছিল, রাজ্যের শাসক দল। অনেকেই সেই সময় মনে করেছিল, রাজ্য সরকারের DA অবস্থানের বিরুদ্ধেই সরকারি কর্মচারীরা সেবার ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু দিন ২ আগেই সামনে এসেছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের(Dhupguri Bye Election) ফলাফল। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে, বিরোধীদের থেকে শাসক শিবির পোস্ট্যাল ব্যালটে বেশি ভোট পেয়েছে। আর তার জেরেই এখন কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশের DA আন্দোলন।
ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়েছিল চলতি মাসের ৫ তারিখ। গণনা ও ফলাফল ঘোষিত হয় ৮ তারিখ। সেদিন গণনা শুরু হয়েছিল পোস্ট্যাল ব্যালটের মাধ্যমেই। সূত্রে জানা গিয়েছিল সেই গণনায় প্রথমে এগিয়ে ছিল তৃণমূলই(TMC)। যদিও বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয় পোস্ট্যাল ব্যালটে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। সেই দাবি বার বার করা হয় নানা সংবাদমাধ্যমের তরফে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন পরে যখন এই উপনির্বাচনের সম্পূর্ণ ফলাফল ওয়েবসাইটে আপলোড করে তখন দেখা যায়, তৃণমূল সবার থেকে বেশি পোস্ট্যাল ব্যালটে ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ ওই উপনির্বাচনে ভোট দেওয়া সরকারি কর্মচারীদের বেশিরভাগই তৃণমূলকেই সমর্থন জানিয়েছেন। দেখা যাচ্ছে তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায় পেয়েছেন ৩৩৯টি পোস্ট্যাল ব্যালটের ভোট, বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায় পেয়েছেন ২৯৬টি ভোট এবং বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ৫৭টি পোস্ট্যাল ব্যালটের ভোট।
আর এই ফলাফল সামনে আসতেই প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের DA আন্দোলন। বিশেষ করে, এই আন্দোলনের সঙ্গে বাম জমানায় নিয়োগ পাওয়া বামপন্থী মনোভাবা সম্পন্ন কর্মচারীরা রয়েছেন তেমনি এর পিছনে বিজেপিপন্থী কমরেড তথা গেরুয়াবাসীরাও রয়েছেন। কিন্তু তারপরেও দেখা যাচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের সমর্থন আবারও ফিরে পাচ্ছে তৃণমূল। ২০২৪’র নির্বাচনের আগে এই তথ্য ও সত্য দুটোই শাসক শিবিরকে নিঃসন্দেহে বাড়তু অক্সিজেনের জোগান দেবে। লক্ষ্যণীয় ভাবে DA’র দাবি সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিও অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে। সেই মামলার শুনানি হবে নভেম্বর মাসে। স্বাভাবিক ভাবেই জোড়া ধাক্কাতে অনেকটাই মুষড়ে পড়েছেন DA আন্দোলনের নেতারা।