নিজস্ব প্রতিনিধি: দুই দফায় দলের ১০জন বিধায়ক দলেরই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। কার্যত দলেরই রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তা বড়সড় বিদ্রোহ হিসাবে সামনে উঠে এসেছে। আর শুধু বিধায়কেরাই নয়, রয়েছেন দলের নেতারাও। এমনিতেই দল লাগাতার হারের মুখ দেখে চলেছে বাংলায়। তারওপর এই কোন্দল দলকে আরও কোনঠাসা করে দিচ্ছে। এমনিতেই রাজ্যের নানান মহলে কার্যত আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে যে দল এবার রাজ্যের প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হতে চলেছে। তারমধ্যে দলের অন্দরেই এবার কোন্দল চলে এসেছে ভরা বাজারে। অগ্যতা সেই কোন্দল থামাতেই এবার দিল্লি থেকে বাংলায় এসে পা রাখছেন দলের সর্বভারতীয় নেতা বি এল সন্তোষ। নজরে বঙ্গ বিজেপি। সন্তোষের এই বঙ্গে পা রাখার উদ্দেশ্যই হল দলের অন্দরে দলেরই রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ জেগে উঠেছে তা প্রশমণ করা আর দল যাতে না ভাঙে, যাতে কোনও হেভিওয়েট নেতা বা বিধায়ক দল না ছাড়েন সেই ব্যবস্থা করা।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিকালে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন সন্তোষ। সেই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন দলের সমস্ত জেলা সভাপতিরা, জেলা ইনচার্জরা এবং সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। বৈঠকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে সাংসদদেরও। যদিও সূত্রের খবর, বৈঠকে ‘বিদ্রোহী’ নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় রয়েই গিয়েছে। তাই সন্তোষ বৈঠকে বসলেও আদৌ অসন্তোষ মিটবে কিনা তা নিয়ে খটকা থেকেই যাচ্ছে। এদিনের বৈঠকে থাকার কথা রয়েছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতারাও। সব থেকে বড় বিষয় সামনেই যখন রাজ্যে দুই দফায় শতাধিক পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে তখন মাঠে নেমে সেই ভোটের প্রস্তুতি নেওয়া তো দূরের কথা বিজেপিকে এখন দলেরই অন্দরে নেতাদের মানভঞ্জনের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে মনে করছেন বিজেপির অন্দরে শুরু হওয়া এই মুষলপর্ব দলকে আরও দুর্বল করার পাশাপাশি তাঁকে ঠেলে দিচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতে এক প্রান্তিক শক্তি হয়ে ওঠার পথে।
গত কয়েকদিন ধরে বঙ্গ বিজেপিতে প্রবল অসন্তোষের পরিবেশ। নতুন রাজ্য কমিটিতে ঠাঁই হয়নি পুরনো কর্মকর্তকাদের, এই অভিযোগে ক্ষুব্ধ দলের অনেক নেতাই। প্রতিবাদ স্বরূপ প্রথম দফায় গত শনিবার ৫ বিধায়ক দলেরই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবার বাঁকুড়ার আরও ৫ বিজেপি বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসেন। এই পরিস্থিতিতে বি এল সন্তোষের বৈঠক এদিন বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। এদিনের বৈঠক থেকে তিনি বিদ্রোহীদের কী বার্তা দেন, সেদিকে তাকিয়ে থাকছে সকলে। এছাড়া বঙ্গ বিজেপির নতুন কমিটি নিয়ে যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে, তা সমাধানেও সন্তোষ কোন টোটকা দেন সেটাও দেখার অপেক্ষায় আছেন অনেকেই।