নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh) তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে নিজের দলকেই বড়সড় বিতর্কের মুখে ফেলে দিয়েছেন। তাঁর সিবিআই নিয়ে করা মন্তব্য একদিকে যেমন প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষুব্ধ করেছে তেমনি দলের বেহাল দশা প্রকাশ্যেই তুলে ধরায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও অখুশি করেছে। এবার এই ধরনের ঘটনার রাশ টানতে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেননা তাঁর দেখছেন বাংলায় শুধু দিলীপই নয়, দলের গোষ্ঠী কোন্দলের একের পর এক নেতা, বিধায়ক ও সাংসদরা একাধিক ইস্যুতে বিভিন্ন ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছেন। এই অবস্থায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংবাদমাধ্যমে সামনে কে কীভাবে মুখ খুলবেন এবার তা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্রদের পাশাপাশি নেতা, বিধায়ক ও সাংসদদের। সেই সঙ্গে কিছু বিধিনিষেধও কার্যকর করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayat Election) দল যাতে অন্তত ৫০ হাজার আসনে প্রার্থী দিতে পারে সেই দিকেও বার্তা দেওয়া হবে এই প্রশিক্ষণ বৈঠক থেকে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গ বিজেপির নেতা থেকে বিধায়ক ও সাংসদদের সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা নিয়ে এবার সার্বিকভাবেই কড়া হতে চাইছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই লক্ষ্যেই আগামী সপ্তাহে কলকাতায় ৩ দিনের এক দলীয় প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করতে চলেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সংবাদমাধ্যমের সামনে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কিংবা দলের কোনও সভায় কীভাবে কথা বলতে হবে, কতটা বলতে হবে, নির্দিষ্ট করে সেই ব্যাপারে ‘প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হবে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। দলের প্রশিক্ষণ শিবিরের কিছু যে সুনির্দিষ্ট প্রোটোকল আছে তা মেনে যাতে বক্তব্য রাখা যায় সেটাই তা৬দের জানিয়ে দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শিবিরে হাজির থাকার কথা দলের অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ(B L Santosh) এবং বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসলের(Sunil Bansal)। যদিও নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর এখনও পর্যন্ত বাংলায় পা রাখেননি বনসল। দেখার বিষয় তিনি এই প্রশিক্ষণ শিবিরে আদৌ যোগ দেন কিনা।
একই সঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়েও একটি বৈঠক হতে পারে দলের রাজ্য কমিটির সঙ্গে বি এল সন্তোষ ও সুনীল বনসলের। সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার যদি পুলিশ, হোমগার্ড, সিভিক ভলেন্টিয়ার দিয়ে ভোট করাতে চায় তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ ও পরামর্শ এবারের বৈঠক থেকেই সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীদের দিয়ে দিতে চান সন্তোষ ও সুনীল। সেই সঙ্গে ওই নির্বাচনে দল কোথায় কোথায় প্রার্থী দেওয়ার মতো অবস্থায় আছে আর কোথায় নেই সেটাও দেখে নিতে চান তাঁরা। রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রায় ৭৭ হাজার আসনে প্রার্থী দিতে চলেছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বিজপি যে সেই অবস্থায় নেই এটা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও বিলক্ষণ জানেন। তারপরেও তাঁরা চাইছেন দল যেন অন্তত ৫০ হাজার আসনে প্রার্থীন দিতে সক্ষম হয়।