নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের ৪টি পুরনিগমে রয়েছে ভোট। সেই চারের মধ্যে রয়েছে বিধাননগর পুরনিগমও। সেই নির্বাচনে ভোটারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। এমনই দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে ভারতীয় জনতা পার্টির আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য আদালতে জানান, কলকাতা পুরনির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে রাজ্যে পুলিশ দিয়ে নির্বাচন করলে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়। স্রেফ নিরাপত্তার অভাবে মানুষ তাঁর নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে যেতে পারেন না। তাই রাজ্যের পুর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করা হোক, যাতে ভোটারদের আস্থা অর্জন করা যায়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ সেই শুনানি শেষে জানিয়ে দিল, বিধাননগর পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রাজ্য ও কমিশনের অবস্থান কী তা আগামী বুধবারের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে।
সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকেও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার আবার আর্জি ছিল আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের যে ১০৮টি পুরসভার নির্বাচন হতে চলেছে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। এদিন সেই মামলারও শুনানি হয় বিজেপির দায়ের করা মামলাটির সঙ্গেই। সেখানে সিপিএমের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জানান, ভোটারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। যিনি নির্বাচনে প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট হবেন, তাঁকে সেই ওয়ার্ডের ভোটার হতে হবে।
আবার বিধানগরের এক বাসিন্দার তরফেও ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিও এদিন একইসঙ্গে হয়। সেই শুনানিতে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী আদালতে জানান, কলকাতা পুর নির্বাচনে অশান্তি হয়েছে, বোমাবাজি হয়েছে। ২০১৫ সালে বিধাননগর পুর-নির্বাচনে ব্যাপক গন্ডগোল হয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন হওয়ায় কোনও অশান্তি বা গন্ডগোল হয়নি। তিনি বলেন, ‘একজন ভোটারের নিরাপত্তা কোথায়? পোলিং স্টেশনে যেতে আমি ইতস্তত বোধ করছি। তাই আদালতের কাছে আমার আবেদন, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করা হোক। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার। আগের নির্বাচনগুলি খতিয়ে দেখা হোক।’ অন্যদিকে এদিনের শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনে দিন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের হাতে আইনশৃঙ্খলা দায়িত্ব থাকে না, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে তিনি জানান, কিছু সময়ের প্রয়োজন।’ বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।