নিজস্ব প্রতিনিধি: নির্ধারিত সূচি মেনেই সমাবর্তন(Convocation) অনুষ্ঠান হয়ে গেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে(Jadavpur University)। উপাচার্য(VC) বুদ্ধদেব সাউয়ের(Budhadev Shaw) উপস্থিতিতেই সেই সমাবর্তন হল। তবে সেখানে হাজির থাকলেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস(C V Anand Bose)। হাজির হলেন না UGC’র প্রতিনিধিও। শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দেন রাজ্যপাল। যদিও রাজ্যের শিক্ষা দফতর জানিয়ে দেয়, বুদ্ধদেবের অপসারণ বেআইনি। শুধু তাই নয়, বুদ্ধদেবকে অস্থায়ী উপাচার্যের পদে পুনর্বহালও করা হয় রাতেই রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফে। একইসঙ্গে তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয় সমাবর্তন আয়োজনের জন্য। অনুরোধ করা হয় অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করার জন্যও। সেই মতো বুদ্ধদেব এদিনের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে হাজিরও হন। তবে পৌরহিত্য করেননি। এমনকি বিতর্ক এড়াতে তিনি এদিন নিজের হাতে পড়ুয়াদের ডিগ্রির সার্টিফিকেট দেননি। সেটা তুলে দিলেন সহ-উপাচার্য। অনুষ্ঠানের পৌরহিত্য করেন, রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু।
এদিন সকালে সমাবর্তনের আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্ট মিটিং শুরু হয়। সেই বৈঠকে দুই পক্ষের চিঠিই পেশ করা হয়। তারপর বুদ্ধদেবের উপস্থিতিতেই নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে শুরু হয় সমাবর্তন। সেখানে সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেন শংসাপত্র। পাশেই বসে থাকেন বুদ্ধদেব সাউ। যদিও জানা গিয়েছে, সমাবর্তনে পড়ুয়াদের হাতে যে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে, তাতে উপাচার্য হিসাবে বুদ্ধদেবের সই রয়েছে। সমাবর্তনের জন্য আচার্যকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে এদিন তিনি আসেননি। শহরে থাকা সত্ত্বেও গরহাজির ছিলেন UGC’র প্রতিনিধিও। একইসঙ্গে নজীরবিহীন ভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম আচার্যের অনুমতি ছাড়াই হয়ে গেল সমাবর্তনের অনুষ্ঠান।
এ দিকে রাজভবনের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ে তোলা হবে। পড়ুয়াদের থেকে যে সমাবর্তনের জন্য যে টাকা নেওয়া হয়েছে, তা উপাচার্য এবং অন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে। যদিও রাজ্যের দাবি, যা কিছু বেআইনি হচ্ছে তা রাজভবনের তরফেই হচ্ছে। কেননা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য একক ভাবে এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বলছে, ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তনের জন্য আচার্যের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। ওই দিন ছাড়া অন্য দিনে সমাবর্তন করতে গেলে আচার্যের অনুমতি নিতে হয়।