নিজস্ব প্রতিনিধি: হাজারো সচেতনতা প্রচার সত্ত্বেও বাংলার(Bengal) বুকে জলাতঙ্কে(Rabies) মৃত্যু অব্যাহত। আর সেই মৃত্যুর কারণ হিসাবে উঠে এসেছে আমজনতার অনীহা। কেননা পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবীতে জলাতঙ্কই হল সেই রোগ যার মৃত্যুহার প্রায় ১০০ শতাংশ। শুধু তাই নয়, দেখা যাচ্ছে বাংলার বুকে এই রোগে বিগত বছরগুলিতে যারা মারা গিয়েছেন তাঁদের কেউ হয় সময়মতো টিকা নেননি, কেউ বা টিকার কোর্স সম্পূর্ণ করেননি। আবার কেউ কেউ এমন আছেন যারা টিকাই নেননি। এই পরিসংখ্যানের ভয়াবহতা বোঝাতে গেলে তাকাতে হবে বাংলার বুকে জলাতঙ্কের চিকিৎসার নোডাল হাসপাতাল(Nodal Hospital) বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের(Beleghata ID Hospital) দিকে। তথ্য বলছে, এই হাসপাতালে গত ৫ বছরে র্যাবিস তথা জলাতঙ্কের বলি হয়েছেন ১৩৬ জন। এদের মধ্যে টিকা না নেওয়া মানুষজন যেমন আছে, তেমনই আছে টিকার ‘কোর্স’(Vaccine Course) সম্পূর্ণ না করা উদাসীন মানুষও আছেন। সেই তালিকায় আছেন একটিও টিকা না নেওয়ার মানুষজনও। অথচ চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞরা বার বার বার্তা দিচ্ছেন, পাগলা কুকুরের পাশাপাশি সাধারন কুকুরেরও আঁচড়, কামড়, ক্ষতস্থান চেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটলে টিকা ছাড়া গতি নেই। কিন্তু সেটাই কেউ মানছেন না। নিট রেজাল্ট বাংলায় অব্যাহত জলাতঙ্কের মৃত্যু মিছিল।
আরও পড়ুন ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্যদের পিছনে ফেলে এগিয়ে বাংলা, স্বীকার কেন্দ্রের
বিশেষজ্ঞদের দাবি, সারা দেশে প্রতি বছরে এখন কুকুরের কামড় খাবার ঘটনা ঘটে প্রায় ২ কোটি ৮০ লক্ষ্যের মতো। কুকুর গন্ধ শুঁকে চলে গেলেও লালার সংস্পর্শে না এলে কিছু করার দরকার নেই। শুধু সাবানজলে জায়গাটি ধুলে চলবে। আর কামড়ালে, আঁচড়ালে এবং তাতে রক্তপাত হলে ইমিউনোগ্লোবিউলিন এবং চার বা পাঁচ দিনের টিকার কোর্স মাস্ট। আঁচড়ালো কিন্তু রক্তপাত হল না, তাতে ক্ষতস্থান ১৫ মিনিট ধরে সাবান জলে ধোয়া এবং টিকা নেওয়াও জরুরি। এই সাধারন হিসাবগুলো একটি মেনে চললেই এই মৃত্যুর হাস এড়ানো সম্ভব। ২০২২ সালে বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে এসে কুকুরের কামড়ের টিকা নিয়ে গিয়েছেন ২৫ হাজারের বেশি মানুষ। ছোট বড় অন্যান্য হাসপাতালের হিসেব ধরলে সংখ্যাটি লক্ষ ছাড়াবে। কিন্তু তারপরও মৃত্যু সম্পূর্ণ এড়ানো যাচ্ছে না। কেননা অনেকেই আসছেন একদম শেষ মুহুর্তে। কেউ কেউ তো দেখা যাচ্ছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। এরাই যদি একটি সচেতন হতেন, সময়মতো টিকা নিতেন, টিকার কোর্সটা সম্পূর্ণ করতেন তাহলে জীবনের ছবিটাই সম্পূর্ণ আলাদা হতো। দেরি করে টিকা নেওয়া, বা না নেওয়ার জন্য এই ভয়ঙ্কর অসুখে আজকের দিনেও বহু মানুষ মারা যাচ্ছেন। একমাত্র এই রোগ নিয়ে মানুষ সচেতন হলে তবেই মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব।