নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বাংলাজুড়ে মুখে মুখে ফিরেছিল একটি শ্লোগান, ‘No Vote to BJP’। কার্যত সেই শ্লোগান গণআন্দোলনের রূপ নিয়েছিল। সেই আন্দোলনের সুফল ঘরে তুলেছিল তৃণমূল(TMC)। ‘আবকে বার ২০০ পার’ শ্লোগান তুলে বাংলা দখলে আসা গেরুয়া ব্রিগেড ও মোদি বাহিনীকে পরাস্ত করে তাঁদের বাংলা দখলের ছক বানচাল করে দিয়েছিল জোড়াফুল। বিজেপি আটকে গিয়েছিল মাত্র ৭৭ আসনেই। সেখানে তৃণমূল ২১০’র ঘরও পার করে যায়। আবারও একটা ভোট দুয়ারে কড়া নাড়ছে। লোকসভা নির্বাচন(General Election 2024)। সেই নির্বাচনের আগে আবারও নয়া শ্লোগান মাত দিতে চলেছে বিজেপিকে। একুশের ভোটে ‘No Vote to BJP’ যে বেশ কাজে দিয়েছিল সেটা দেখে ভোটের পরে এই স্লোগানের রূপকারদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও(Mamata Banerjee)। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশও বাংলায় ২০০ পার করার দাবি তোলা বিজেপির ৭৭-এ আটকে যাওয়ার নেপথ্যে এই স্লোগানের ভূমিকা স্বীকার করেছেন। তিন বছর পর লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে ফের আসরে নামছেন ‘No Vote to BJP’র রূপকারেরা। তবে এবার তাঁদের স্লোগান হতে চলেছে, ‘Defeat BJP’ বা ‘বিজেপিকে হারিয়ে দাও।’
আগামী ১৩ মার্চ কলকাতার মৌলালি যুবকেন্দ্রে কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে ‘ফ্যাসিস্ট আরএসএস, বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলা’ নামে মূল মঞ্চের তরফে। সেই কনভেনশনের আয়োজক কুশল দেবনাথের যুক্তি, ‘গত দশ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে গণতন্ত্রকে পুরোপুরি ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তাই সরাসরি এবার সেই ফ্যাসিস্ট শাসকদের পরাজয়ের ডাক দিচ্ছি।’ একুশের নির্বাচনে ‘No Vote to BJP’ শ্লোগান যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডিভিডেন্ড এনে দিয়েছিল সেটা অস্বীকার করার জায়হা নেই। আর এবার তো বাংলা থেকে বিজেপিকে উৎখাত করার পালা। তাই শ্লোগানকে আরও জোরদার করে তুলতে চাইছেন কুশলরা। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ ও রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম এই মঞ্চ থেকেই তৃণমূলে এসেছেন। দুইজনই কার্যত ‘No Vote to BJP’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, তাঁরা অরাজনৈতিক সংগঠনের শ্লোগানকে তৃণমূলের হয়ে ব্যবহার করেছেন।
এই প্রশ্নে তন্ময়ের দাবি, ‘No Vote to BJP বলেছিলাম ঠিকই। কিন্তু No Vote to Congress বা CPM বা তৃণমূল তো বলিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিচক্ষণ বলেই তিনি এটাকে কাজে লাগিয়েছেন। অন্যরাও পারত। করেনি কেন?’ সামিরুলের বক্তব্য, ‘No Vote to BJP-ই আমার একমাত্র পরিচয় নয়। আমি দীর্ঘদিন ধরে নানা গণআন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।’ এই মঞ্চের আরও এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কস্তুরী বসুর সংযোজন, ‘বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল এবং আছে। তাতে কোনও দোষ নেই। বহু বামপন্থী আমাদের সঙ্গে আছেন। কিন্তু গায়ে লেগেছে তাঁদের যারা বলতেন আগের রাম পরে বাম।’ দেখার বিষয় ‘No Vote to BJP’ শ্লোগান যতটা ডিভিডেন্ড তৃণমূলকে একুশের ভোটে এনে দিয়েছিল তার থেকেও বেশি ডিভিডেন্ড ‘Defeat BJP’ বা ‘বিজেপিকে হারিয়ে দাও’ ২৪’র ভোটে তৃণমূলকে এনে দিতে পারে কিনা।