নিজস্ব প্রতিনিধি: বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল(Anubrata Mondol) বার বার সিবিআইয়ের(CBI) তলব এড়িয়ে যাচ্ছেন। আর তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh) সোমবার সকালে নিজের আশঙ্কার কথা জানালেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে। সেই আশঙ্কার বার্তার জেরে দিলীপকে তৃণমূলের তরফে আবার পাল্টা বিঁধলেন বিজেপি ছুট জয়প্রকাশ মজুমদার(Jayprakash Majumdar)।
এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পরে অনুব্রত মণ্ডল এখন রয়েছেন রাজারহাটে চিনার পার্ক এলাকায় তাঁর ফ্ল্যাটে। হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পরেই শনিবার বিকালে গরু পাচার মামলায় তাঁকে নিজাম প্যালেসে নিজেদের কার্যালয়ে তলব করেছিল সিবিআই। সেই সঙ্গে রবি দুপুরেও তাঁকে তলব করা হয়েছিল ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। কিন্তু অনুব্রতের আইনজীবী ই-মেল করে সিবিআইকে জানিয়ে দেন, অনুব্রত মণ্ডল অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন। তাঁর পক্ষে বাড়ির বাইরে বার হওয়া সম্ভব নয়। তবে যদি সিবিআইয়ের আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান সে ক্ষেত্রে অনুব্রতর কোনও সমস্যা নেই। তবে কোনও মতেই বাড়ির বাইরে বার হওয়ার মতো শারীরিক অবস্থায় নেই তাঁর। সেই ই-মেলের কোনও জবাব এখনও আসেনি বলেই এদিন অনুব্রতবাবুর আইনজীবী জানিয়েছেন। তবে নিজাম প্যালেস সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাঁর বাড়িতে আসার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। এমনকি দুটি মামলায় অনুব্রতর জন্য ইতিমধ্যেই প্রশ্নপত্র তৈরি করে ফেলেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা্র আধিকারিকেরা।
সোমবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে মর্নিংওয়াক সেরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুব্রতকে নিয়ে মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। জানান, ‘আমার যেটা সন্দেহ হচ্ছে,জেলে থাকলে অনুব্রত মণ্ডল নিরাপদে থাকবেন। না হলে তাঁকে খুনও করা হতে পারে। অনুব্রত অনেক কিছু জানেন। সেই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁকে খুন করা হতে পারে। জেলই ওঁর জন্য তূলনামূলক ভাবে নিরাপদ। তাই সুযোগ পেলে তার সদ্ব্যবহার করা উচিত। অনুব্রতবাবুকে আমার পরামর্শ সিবিআই এড়াবেন না, জেলে নিয়ে গেলে ঢুকে পড়ুন, বাইরে থাকলে মেরে দেবে। হয় অনুব্রত সারাজীবন হাসপাতালে থাকবে নইলে জেলে। জেলে থাকলে ঠিক আছে, নিরাপদে থাকবেন। হাসপাতালে থাকলে বাঁচার সম্ভাবনা কম। হাসপাতালে থাকলে ওঁকে বাঁচতে দেওয়া হবে না। মেরে ফেলা হতে পারে। অনুব্রত অনেক মামলায় অভিযুক্ত। একটা চাবি হারিয়ে ফেললেই হল। তাই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য ওঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। সিবিআই দেখলেই খালি ওঁর শরীর খারাপ করে যাচ্ছে। আজ না হয় কাল ওঁকে তো আসতেই হবে। এভাবে তো বেশিদিন বাঁচা যায় না। সিবিআই সারা দেশেই তদন্ত করছে। বাংলাতেও সেভাবেই একাধিক কেসের তদন্ত করছে। বহু লোককে ডাকছে তদন্তের খাতিরে। তাঁরা সবাই তো আর দোষী নয়। তাহলে তো তৃণমূল কংগ্রেসের সব নেতাই এতদিনে জেলে থাকত।’
অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে দিলীপের এহেন মন্তব্যের জেরে দিলীপকেই এদিন আবার পাল্টা বিঁধেছেন জয়প্রকাশ মজুমদার। জানিয়েছেন, ‘দিলীপবাবু যখন সব কিছুই জানেন তখন সিবিআইয়ের উচিত তাঁকে ডেকে জেনে নেওয়া। অনুব্রত মণ্ডলকে হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কেও দিলীপবাবুর কাছ থেকেই জেনে নেওয়া উচিত। রোজ খবরে থাকতেই ওঁকে এ সব বলতে হয়। কিন্তু এ কথা ওঁর মুখে মানায় না।’