নিজস্ব প্রতিনিধি: টুইট(Tweet) যুদ্ধ অব্যাহত। সেই সঙ্গে চলছে বাকযুদ্ধও। আর সেই টুইট-বাক যুদ্ধে অস্বস্তি ক্রমশই বেড়ে চলেছে বঙ্গ বিজেপিতে(Bengal BJP)। কেননা যে দুইজনের মধ্যে এই টুইট-বাক যুদ্ধ চলছে তাঁরা প্রত্যেকেই বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। একজন তথাগত রায়(Tathagatha Roy), অন্যজন দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)। গত বৃহস্পতিবার দিলীপ অভিযোগ তোলেন তথাগত যখন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি ছিলেন তখন রাজ্য বিজেপির কার্যালয়কে তিনি পানশালা বানিয়ে দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগেরই শনিবার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তথাগত রায়। তাও টুইট করে। আর এই সব দেখে এখন বঙ্গ বিজেপির নেতাদের দাবি, ‘দু’জনেই প্রবীণ। নিজেদেরই থামা উচিত। তা না হলে এ লড়াই থামার নয়।’
দিলীপের সঙ্গে তথাগতের তরজা নতুন কোনও বিষয় নয়। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। শুরুটা প্রতিবারই তথাগতই করেছেন দিলীপকে টুইতে আক্রমণ করে। প্রতিবারই দিলীপ চেয়েছেন সেই সব বিষয়ে মাথা না ঘামাতে। তথাগতের বিরুদ্ধে মুখ খুললেও চেষ্টা করেছেন তা চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে। তবে মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যে বিবৃতিও দিয়েছেন কিছুটা বাধ্য হয়েই। তাঁদের তরজায় দলের ভাবমূর্তি ডুবছে দেখে দুইজনের সঙ্গেই আলাদা আলাদা করে কথা বলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। তারপর কিছুদিনের জন্য এই টুইট-বাক যুদ্ধ বন্ধ ছিল দুইজনের মধ্যে এখন আবারও তা শুরু হয়েছে। আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনের পরে তথাগত নাম না করেই দিলীপকে বিঁধে টুইট করেছিলেন। লিখেছিলেন, ‘কেডিএসএ অর্থাৎ কৈলাস, দিলীপ, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দের টিম পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জেতা গেম হারিয়ে দিয়েছে এবং সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে কামিনী-কাঞ্চন আকণ্ঠ উপভোগ করেছে। আমার জীবনে এ রকম রাজনৈতিক ভাবে নিজের পায়ে কুড়ুল মারা আমি কখনও দেখিনি বা শুনিনি। এই কথাটা প্রকাশ্যে বলা প্রয়োজন ছিল। কারণ তা না হলে এরা যে রকম চালাচ্ছিল, তাই চালিয়ে যেত। আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে বিজেপির যা ফল হল তা তো অপ্রত্যাশিত নয়! শুধু শুধু দুটো মেয়েকে এই উৎকট গরমের মধ্যে ঘুরিয়ে অপমান করানো হল। বেবুন এবং ফিটার মিস্ত্রি যা মজা লুটবার, তা তো লুটে নিয়েছে। বিজেপির শোচনীয় ফল— সেটা মজা লোটারই পরিণাম। কর্মীদের মনোবল তলানিতে। পেট্রল-গ্যাসের দাম গৌণ কারণ।’
সেই টুইটের জেরে দিলীপ প্রকাশ্যেই তথাগতের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘যাঁরা লোকের পায়ে ধরে চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা বিজেপি পার্টি অফিসকে পানশালা বানিয়ে দিয়েছিলেন, জীবনে ফূর্তি ছাড়া কিছু করেননি, যাঁরা সিপিএম ও তৃণমূলের থেকে সব সুবিধা নিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল বিজেপি যাতে কোনও দিনই চার শতাংশের বেশি ভোট না পায়। সেই সব আহাম্মকদের কথা কে শোনে?’ দিলীপের সেই বক্তব্যের জেরে রীতিমত হইচই পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। দিলীপের সেই বক্তব্যেরই শনিবার জবাব দিয়েছেন তথাগত। তাও টুইট করে। লিখেছেন, ‘আমি কখনও জল ও চা ছাড়া কোনও কিছুই দলীয় দফতরের তিন কিলোমিটারের মধ্যে পান করিনি। এটা আমি হলফনামা দিয়ে বলতে পারি। আমার বিরুদ্ধে দলীয় দফতরে মধুশালা তৈরি, তৃণমূলের থেকে সুবিধা নিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ তোলার পরে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে অনভিজ্ঞ বলার পিছনে কারণ কী? নিজে অষ্টম শ্রেণি পাশ অর্ধ-শিক্ষিত বলেই কি শিক্ষিতদের সহ্য করতে পারেন না?’ এখন দেখার বিষয় দিলীপ এই টুইটের কী জবাব দেন।