নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার(Kolkata) ধর্মতলায় শাহি সভার বাধা কিছুটা হলেও কাটল। কেননা কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বহাল রেখে ডিভিশন বেঞ্চও জানিয়ে দিল, নির্দিষ্ট দিনেই শাহি সভা(Meeting of Amit Shah) করতে দিতে হবে বিজেপিকে। আগামী ২৯ নভেম্বর ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভার আয়োজন করে কলকাতা পুলিশের(Kolkata Police) কাছে আবেদন জানিয়েছিল বিজেপি। সেই আবেদন দু দফায় খারিক করে কলকাতা পুলিশ। তার জেরেই বিজেপি(Bengal BJP) হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। সেই মামলাতেই হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ সভা করার অনুমতি দিতে বলেছিল কলকাতা পুলিশকে। সেই রায় দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার হাইকোর্টেরই ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল। সেই মামলাতেই এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, নির্দিষ্ট দিনেই ধর্মতলায় বিজেপিকে সভা করতে দিতে হবে।
এদিন বিজেপিকে সভা করার অনুমতি দিয়ে আদালত জানিয়েছে, কর্মসূচির জন্য কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইটে দেওয়া শর্ত মানতে হবে। তবে অতিরিক্ত কোনও শর্ত যে সভার আয়োজকদের ওপর চাপানো যাবে না। এদিন মামলার রায় দেওয়া সময় বিচারপতি ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস কর্মসূচির প্রসঙ্গও তোলেন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম সাফ জানান, ‘২১ জুলাই বাতিল করে দিচ্ছি। আমরা সব বন্ধ করে দিচ্ছি। কোনও মিটিং, মিছিল, সভা নয়। একটাই সমাধান, সবার জন্য সব কর্মসূচি বন্ধ করেছি। সেটা করলে কী ভাল হবে? রাজনৈতিক ভাবে অযথা সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। ২ সপ্তাহ আগে আবেদন করা যথেষ্ট। রাজ্যে এই সব কর্মসূচি লেগেই থাকে। মানুষের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে ভাবেন না। সরকারি কর্মচারী, রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সবাই রাস্তা আটকে মিছিল করে। পুলিশ অনুমতি দিয়ে দেয়। এটা এখানে খুব সাধারণ বিষয়। অন্য রাজ্যে আমার অভিজ্ঞতা আলাদা। হাইকোর্ট থেকে যাওয়ার জন্য গত কালও পুলিসের তরফ থেকে দু’টি চিঠি পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, আমাদের বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে। আবার কর্মসূচি হলে সবাই তাই করবে। মানুষ ঘুরে ঘুরে যাবে।’
রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, ‘অনেকে অনেক কিছু করছে, তবুও রং দেখা হচ্ছে কেন? মানুষকে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দিন। কী করা যাবে? ছটপূজা নিয়ে রাস্তা বন্ধ ছিল। মানুষ অন্য জায়গা দিয়ে ঘুরছে। এত আগেও আবেদন করার পরেও আপনারা এটাকে যদি অনুমতি না দেন তা হলে তো রাজ্যে কোনও কর্মসূচি করা যাবে না। আমরা বলে দিচ্ছি, রাজ্যের কোথাও কোনও কর্মসূচি হবে না। নিয়মের কথা বলছেন। শাসক দলের কর্মসূচির ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানেন? তাদের ক্ষেত্রে কী নিয়ম মানেন সেই তালিকা নিয়ে আসুন। বালিগঞ্জ এলাকায় রাত ৩টে পর্যন্ত ড্রাম বাজিয়ে লরির ওপরে লোকজন শোভাযাত্রা করেছে। চার-পাঁচ দিন আগে দেখলাম ট্রাকের মাথায় একটি শিশুকে নিয়ে লোক যাচ্ছে। ধরে বসার কিছু নেই। পণ্যবাহী গাড়িতে করে মানুষ যাচ্ছে। পুলিশ কিছু বলছে না! এটা তো আইন লঙ্ঘন করছে। কোনও নোটিস না দিয়ে গোটা শহর স্তব্ধ করে দিয়েছিল কুর্মি সম্প্রদায়। কেন এরকম হবে? আদালত এগুলো দেখেছে।’ এখন দেখার বিষয় হাইকোর্টের এই অবস্থানের পরে রাজ্য সরকার এই সভা ঠেকাতে সুপ্রিম কোর্টে যায় কিনা।