নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশজুড়ে যথাযথ মর্যাদায় বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে দেশের সংবিধানের রূপকার ডা. বি আর আম্বেদকরের(Dr. B R Ambedkar) জন্মজয়ন্তী। আর সেই দিনেই টুইট করে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘ডা. বি আর আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তীতে জানাই আমার অন্তরের শ্রদ্ধা। তাঁর জীবন ও কাজ আমাদের নিরবিচ্ছিন্ন ও অক্লান্ত ভাবে কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করুক যাতে মানুষের জন্য আরও ভাল কাজ করা যায় এবং আমরা যেন সংবিধানের মূল আদর্শগুলি রক্ষা করে চলতে পারি।’ ঘটনাচক্রে এদিনই আবার সাংবিধানিক রীতিনীতি লঙ্ঘণ করে বিধানসভা ভবন চত্বরে দাঁড়িয়ে রাজ্যের ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের(Jagdeep Dhankar) বিরুদ্ধে। যার জেরে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁরাও সরব হলেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে।
ঠিক কী বলেছেন এদিন রাজ্যপাল? এদিন রাজ্যপাল বিধানসভা ভবনে আসেন ডা. বি আর আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করতে। মাল্যদান পর্ব শেষ করেই রাজ্যপাল সাংবাদিকদের সামনে এমন কিছু কথাবার্তা বললেন যার জেরে অভিযোগ উঠে গিয়েছে রাজ্যপাল বাংলার ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করছেন। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ‘বাংলা গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার। পুড়িয়েও মারা হচ্ছে। চাকরিও দেওয়া হচ্ছে। সিবিআই তদন্ত নিয়ে এত প্রশ্ন কেন? আমার কাছে রাজ্যের কোনও রিপোর্ট আসে না। অথচ মহিলাদের উপর অত্যাচার বাড়ছে। ভোট পরবর্তী হিংসায় প্রাণহানি পর্যন্ত হয়েছে। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিছু মানুষ কী আইনের ঊর্ধ্বে? গতকাল হাই কোর্টে যা ঘটেছে তা দুঃখজনক। বিচারের মন্দিরের মাথা হেঁট করা অনুচিত। রাজ্যের মানুষ ভয় নিয়ে বেঁচে আছেন। শাসন ব্যবস্থার সবসময় একটা নির্দিষ্ট দিকে চলা উচিত।’ এইসব কথাবার্তার মধ্যে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়(Biman Banerjee) তাঁকে থামাতে গেলেও রাজ্যপাল তা গ্রাহ্যের মধ্যে আনেননি। আর তার জেরেই তাঁকে এখন আক্রমণ শানছেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ থেকে শাসক দলের নেতৃত্ব।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘প্রত্যেকের নিজস্ব গণ্ডি রয়েছে। সেই গণ্ডি অনুযায়ীই কাজ করা উচিত। রাজ্যপাল অনেক কথা বললেন। যা পুরোপুরি ঠিক না। আমরা সংবিধান মেনেই কাজ করি।’ কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim) আবার জানিয়েছেন, ‘উনি অগাধ ক্ষমতা চাইলেই তো তা দেওয়া সম্ভব নয়। সবাইকে নিজস্ব গণ্ডির মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। ওনাকেও সেটাই করতে হবে। বাংলার ভাবমূর্তি এভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। বাংলার কোনও মানুষই তা মেনে নেবেন না।’ ঘটনার জেরে তৃণমূলের তরফে সাংসদ শান্তনু সেন জানিয়েছেন, ‘সাংবিধানিক প্রধান হয়েও সংবিধানকে কলঙ্কিত করছেন রাজ্যপাল। দলদাসে পরিণত হয়েছেন তিনি।’