নিজস্ব প্রতিনিধি: সবুজ ঝড় যে সিটি অফ জয়ে আছড়ে পড়তে চলেছে সেই পূর্ভাবাস আগে থেকেই ছিল। মঙ্গলবার সকালে সেই শহরের ১১টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গণনা শুরু হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে শহরজুরে সবুজ ঝড়। আর সেই ঝড়ে ভূমি শয্যা নিয়েছে বিরোধীরা। কলকাতা পুরনিগমে বিরোধী দল হতে গেলে নূন্যতম ১৫টি আসন দখলে থাকা চাই কোনও রাজনৈতিক দলের। ২০১৫ সালে সেই শর্ত কিন্তু পূরণ করেছিল বামেরা। কিন্তু এদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত যে ট্রেন্ড উঠে আসছে তাতে এটা পরিষ্কার এবারে কলকাতা পুরনিগমে কিন্তু বিরোধী দল হিসাবে কেউই উঠে আসতে পারছেন না। এমনকি বাম, কংগ্রেস, বিজেপি ও নির্দল এদের মিলিত পরিমাণও সেই সংখ্যা ছুঁতে পারছে না। আর বিরোধী শিবিরের এই দুর্দশা দেখেই এদিন তীব্র কটাক্ষ হেনেছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা বিদায়ী পুরবোর্ডের প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জানিয়েছেন, ‘বিরোধীরা লড়াইয়ের আগেই হেরে বসে আছে।’
এদিন সকালে গণনা শুরু হওয়ার কিছুটা আগেই আলিপুরের হেস্টিংস হাউস গণনাকেন্দ্রে পৌঁছে যান ফিরহাদ। নিজের ৩ মেয়েকেও সঙ্গে নিয়ে যান তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মেজ মেয়ে সুপারভাইজার এবং অন্য দুই মেয়ে কাউন্টিং এজেন্ট হিসেবে এখানে থাকছে। আমি চেতলা অগ্রণীতে থাকছি। সবাই আগে থেকেই যানেন যে চারিদিকে তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে। তাই খুব বেশি রেষারেষি নেই। আর এমনিতেই নির্বাচনের আগেই হেরে বসে আছে বিরোধীরা। ভোট হয়নি একথা কলকাতার কোনও মানুষ বলবেন না। নিজেরা হেরে যাবেন বলে বিরোধীরা ভোট হয়নি বলে দাবি করছে। ওরা অপদার্থ, মানুষের সঙ্গে ওদের কোনও যোগাযোগই নেই। ওরা প্রতিনিয়ত মানুষকে অপমান করেছে। আর গণনাকেন্দ্রে বিরোধী দলের যে এজেন্টরা রয়েছেন তাঁদের জানাচ্ছি, কোনওরকমের চিন্তা করবেন না। সৌভ্রাতিত্বপূর্ণ ভাবে যেন কাউন্টিং হয়। যেই জিতুক অথবা হারুক, সবাই যেন শুভেচ্ছা বিনিময়ের পরেই কাউন্টিং শেষ করে বেরোন।’
এদিন সকালে ভোটের গণনার ট্রেন্ডে তৃণমূলের বিপুল জয়ের ছবি ফুটে উঠতেই তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ফিরহাদ হাকিম। সকাল ১০টার মধ্যে শহরের সব ওয়ার্ডের ফলাফলের ট্রেন্ড সামনে চলে এসেছে। সেখা যাচ্ছে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩৪টি ওয়ার্ডে হয় জয়ী হয়ে গিয়েছে অথবা এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা। বাম ও বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৩টি করে ওয়ার্ডে। কংগ্রেস ১টি আসনে জয়ী হয়েছে ও ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। নির্দল প্রার্থীরা ১টি আসনে জয়ী হয়েছে ও ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। তৃণমূলের বেশ কিছু হেভিওয়েট প্রার্থী ১০ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।