নিজস্ব প্রতিনিধি: বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে কলকাতা পুরনিগমের(KMC) নানা এলাকায় অভিযোগ উঠছিল আগেকার বোর্ডের কাউন্সিলররা যে সব কর্মীকে ১০০ দিনের কাজের(100 Days Work Project) জন্য নিয়োগ করেছিলেন, তাঁদের ছাঁটাই করে দেওয়া হচ্ছে। সেই জায়গায় নেওয়া হচ্ছে নতুন কর্মীদের। আর তার জেরে শহরের নানা বরো কার্যালয়ে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ। এবার সেই ক্ষেত্রেই কড়া পদক্ষেপ করলেন কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)। পুরনিগমের তরফে এবার সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, মেয়রকে না জানিয়ে ও তাঁর বিনা অনুমতিতে ১০০ দিনের কাজে নেওয়া কোনও কর্মীকে ছাঁটাই(Lay off Staff) করা যাবে না। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে নতুন যারা কাউন্সিলর হয়েছেন তাঁরা যেন নিজ নিজ ওয়ার্ডের আগেকার কাউন্সিলরদের(Councilors) ঠিক করে যাওয়া কর্মীদের ছাঁটাইয়ের সুপারিশ না করেন। প্রয়োজনে আরও বেশি লোককে এই প্রকল্পের কাজ দেওয়া হবে, কিন্তু যারা কাজ করছিলেন আগে থেকে তাঁদের ছাঁটাই করা যাবে না কোনও ভাবেই।
আরও পড়ুন এ তো রেড কার্পেট বিছিয়ে দুর্নীতিকে অভ্যর্থনা, ট্যুইট চিদাম্বরমের
কয়েক সপ্তাহ আগে বেতন না পাওয়ার ফলে বেহালায় কলকাতা পুরনিগমের একটি অফিসে বিক্ষোভ দেখান ১০০ দিনের কাজের কর্মীরা। পরে জানা যায়, তাঁদের আচমকা কর্মচ্যুত করে নতুন কর্মীদের দিয়ে ১০০ দিনের কাজ শুরু করা হয়েছিল। একই অভিযোগ উঠেছিল উত্তর কলকাতার কাশীপুর-বেলগাছিয়া এলাকাতেও। সেখানেও ১০০ দিনের কাজের পুরনো কর্মীদের বসিয়ে নতুনদের দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ উঠেছিল ওই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি মেয়রের কানে যেতে বেশি সময় লাগেনি। তারপরে পরেই তাঁর নির্দেশে দুটি জায়গাতেই হস্তক্ষেপ করে পুরনিগম কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে জারি করে দেওয়া হয়েছে নয়া বিজ্ঞপ্তিও। সেই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। তাতে জানানো হয়েছে, মেয়র ফিরহাদ হাকিমের অনুমতি ছাড়া এখন থেকে ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের ছাঁটাই করা যাবে না। নতুন নিয়োগও করা যাবে না। অর্ডারের সেই কপি কাউন্সিলারদের মধ্যে বিলিও করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন নয়া বেতন কাঠামো Coal India’র, লাভবান হবেন সাড়ে ৫ লক্ষ কর্মী
পুরনিগম সূত্রে খবর, গোটা সমস্যা তৈরি করেছিলেন কলকাতার কয়েকজন নতুন কাউন্সিলার, যারা সকলেই তৃণমূলের। অলিখিতভাবে ১০০ দিনের কাজে কাউন্সিলারদের একাংশ নিজেদের অনুগতদের ব্যবহার করেন দীর্ঘদিন ধরেই। কার্যত শহরের বুকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের কর্মীদের প্রায় ৮০ শতাংশই এলাকার কাউন্সিলারের পছন্দ অনুযায়ী কাজ পান। কিন্তু দেখা গিয়েছে, কোনও ওয়ার্ডে জিতে আসার পর প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিদের নিযুক্ত করা কর্মীদের ছেঁটে ফেলছিলেন নতুন কাউন্সিলারদের একাংশ। পরিবর্তে সে জায়গায় নিজের অনুগতদের কাজের সুযোগ করে দিচ্ছিলেন। এর ফলে ওই ওয়ার্ডগুলিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। কাজ খুইয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কর্মীরা। আবার নতুন কর্মীদের অনেকে যোগ দেওয়ার পর কাজে ফাঁকি দিচ্ছিলেন। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মেয়রের নির্দেশে কমিশনার নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন, প্রত্যেক কন্ট্রোলিং অফিসারকে ১০০ দিনের কর্মীদের হাজিরা খাতায় নিয়মিত নজর রাখতে হবে। কোনও কর্মী কাজ না করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যখন তখন কাউকে ছাঁটাই বা নতুন কর্মী নেওয়া যাবে না। তা করতে গেলে মেয়রের অনুমোদনের প্রয়োজন আবশ্যিক।