নিজস্ব প্রতিনিধি: এলগিন রোডের স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা বিস্ফোরক তথ্য হাতে পেয়েছেন বলেই সূত্রে জানা গিয়েছে। আর সেই সূত্রেই জানা গিয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সমকামীতার সম্পর্কও। কেননা এলগিন রোডের যে গেস্ট হাউস থেকে ওই ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়েছে সেই গেস্ট হাউসের বিশেষ ওই ঘরেই মিলেছে ব্যবসায়ীর নগ্ন দেহের পাশে থাকা লুব্রিক্যান্টও। যেহেতু ব্যবসায়ীর নামে বুক করা ওই ঘরে কোনও মহিলা প্রবেশ করেননি এবং এক যুবক তাঁর সঙ্গে ওই রুমে ঢুকেছিল, অন্তত যাকে প্রাইম সাসপেক্ট হিসাবে দেখছে পুলিশ, তাই তাঁদের দুইজনের মধ্যেকার সমকামী সম্পর্কের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে এমনটাই এখন মনে করছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যাবেলায় কলকাতার লি রোডের বাসিন্দা শান্তিলাল বৈদ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পান কিনতে গিয়ে অপহৃত হন বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ তুলেছিল। এমনকি তাঁদের দাবি ছিল ৩ কোটি টাকা চেয়ে ফোনও এসেছিল তাঁদের কাছে। তার জেরেই তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ সেই ফোনের সূত্র ধরেই এলগিন রোডের ওই গেস্ট হাউসে হানা দেন ও সেখানে ওই ব্যবসায়ীর নামে বুক করা ঘর থেকে দরজা ভেঙে তাঁর দেহ উদ্ধার করে। খাটের মধ্যে নগ্ন অবস্থায় পড়ে ছিল দেহ। তার পাশ থেকেই লুব্রিক্যান্ট পেয়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে এদিন সকালে ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন আদৌ অপহরণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ওই ব্যবসায়ী স্বেচ্ছায় ওই যুবককে নিয়ে এলগিন রোডের ওই গেস্ট হাউসে এসেছিলেন ব্যক্তিগত কিছু ঘনিষ্ঠ মুহুর্ত কাটানোর জন্য। আর সেই সময়েই ঘটে যায় খুনের ঘটনা। তবে তার আগে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন গিয়েছিল ব্যবসায়ীর পরিবারে। আর এখানেও চমক। ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের তরফে প্রথমে দাবি করা হয়েছিল ৩ কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। পরে পুলিশ জানতে পারে ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল।
পুলিশ এটাও জানতে পারে, ওই ব্যবসায়ীর নামে রুম বুক করা হলেও সন্দেহভাজন ওই যুবক গেস্টহাউসে চেক ইন করেছিলেন সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ। পরে বিকালের দিকে গেস্ট হাউস থেকে বেড়িয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ওই ব্যবসায়ীকে নিয়ে ওই রুমে ফেরে যুবক। এরপর মিনিট ৪০ বাদে কাউকে কিছু না জানিয়ে চেক আউট না করেই গেস্ট হাউস থেকে বেরিয়ে যায় ওই যুবক। পুলিশের ধারনা ওই যুবক ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। এখন তার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।