নিজস্ব প্রতিনিধি: অযোধ্যার রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিনই(Inauguration Day of Rammandir) কলকাতায়(Kolkata) সংহতি মিছিলে হাঁটলেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন শহর কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের জেলায় জেলায়, ব্লকে ব্লকে সম্প্রীতি মিছিলেরও আয়োজন করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) তরফে। বিজেপির তরফ থেকে এই দুই মিছিলেরই বিরোধিতা করা হয়েছিল, কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও ঠোকা হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এদিন মমতার নেতৃত্বাধীন সংহতি মিছিলকে তাই বোধহয় কিছুটা বাধ্য হয়েই স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস(C V Anand Bose)। তাঁর এহেন পদক্ষেপের দরুণ অনেকেই জানতে আগ্রহী হয়েছেন যে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের দূরত্ব মিটল কিনা! যদিও রাজভবন থেকে সেই রকমের কোনও বার্তা আসেনি।
মমতার মিছিলকে এদিন স্বাগত জানিয়ে রাজ্যপাল বোস মন্তব্য করেছেন, ‘আমি প্রার্থনা করলে একজন ব্যক্তির প্রার্থনা থাকে না। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, বাংলার মাটি বাংলার জল। রাম আমাদের হৃদয় সঙ্গে যুক্ত আছেন। সারা পৃথিবীর সঙ্গে যুক্ত আছেন। আমাদের শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। কোনও জিনিস যদি বাংলাকে এবং ভারত জুড়ে রাখে তার জন্য যদি সম্প্রীতি বজায় থাকে, তাহলে সেটাকে আমি স্বাগত জানাবো।’ দেখার বিষয় মমতার মিছিলকে স্বাগত জানানোর জন্য গেরুয়া শিবিরে তার মার্কস বাড়ে না কমে! উল্লেখ্য, রামমন্দির উদ্বোধনের দিনেই সম্প্রীতির বার্তা দিতে কলকাতায় সংহতি মিছিলের ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সেই মিছিলেই হাঁটতে দেখা গেল রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ এবং তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের। যদিও এই মিছিলকে রাজনৈতিক মিছিল বলতে রাজি নয় তৃণমূল কংগ্রেস। কেননা তাঁদের দাবি, মিছিলে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন সহ একাধিক ধর্মের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিতেই এদিনের মিছিলের আয়োজন।
এদিনের মিছিলের সামনের দিকেই ছিলেন মমতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুরা। তবে সেই জায়গায় মমতার আশেপাশে ছিলেন না কোনও রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা। মমতার পিছনে ছিল পুলিশ। তার থেকে কিছুটা দূরে ছিল মূল ভিড় যার সামনের দিকেই ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, অভিষেকের কাকিমা কাজোরী বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ শান্তনু সেন, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার, কলকাতা পুরনিগমের তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যুব তৃণমূলের নেতানেত্রীরা। এরপরেই ছিলেন তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকেরা। সেই ভিড় থেকেই আওয়াজ ওঠে, ‘বিজেপি হটাও, দেশ বাঁচাও’। মিছিলকে রাজনৈতিক রং না লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বিজেপি বিরোধী স্লোগান এদিন বারে বারে উঠতে দেখা যায় মিছিল থেকে।