এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে দেশের ভূগর্ভস্থ জল, কলকাতায় জলাভূমিতে অক্সিজেনের ঘাটতি

নিজস্ব প্রতিনিধি: খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসতে চলেছে দেশের ভূগর্ভস্থ জলের(Water Below Surface) পরিমাণ। সংসদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে মোদি সরকার(Modi Government)। দেশের ১৯টি বড় শহরে ভূগর্ভস্থ জল তোলার হার ১০০ শতাংশেরও বহু গুণ বেশি। যদিও তালিকায় বাংলার(Bengal) কোনও শহরের নাম নেই। কেন্দ্রের এহেন তথ্যকে রীতিমতো উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। তবে বাংলার ক্ষেত্রে কলকাতার(Kolkata) জন্যও উদ্বেগ থাকছে। কেননা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যর বিশেষজ্ঞ কমিটির তরফে নবান্নে রিপোর্ট জমা পড়েছে যে রাজ্যের একমাত্র রামসর তথা পূর্ব কলকাতার প্রাকৃতিক জলাশয়ে(Wetland) অক্সিজেন(Oxygen) কম। জল স্নানের অযোগ্য। পাশাপাশি জলে কলিফর্মের মত দূষকের পরিমাণও নির্ধারিত মাত্রা ছাড়িয়েছে। ফলে জলজ প্রাণী ও মাছের ক্ষেত্রে ওই জল উপযুক্ত নয়।

আরও পড়ুন Housing for All প্রকল্পে কাউকে আর ১টাকাও দিতে হবে না

সম্প্রতি লোকসভায় মোদি সরকারের জলশক্তি মন্ত্রক Central Groun Water Board’র Ground Water Situations in Select Cities in India শীর্ষক রিপোর্ট পেশ করেছে সংসদে। সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ভূগর্ভস্থ জল তোলার হার দিল্লিতে ৩৬০ শতাংশ, ফরিদাবাদে ২৬৯ শতাংশ, গুরুগ্রামে ৩০০ শতাংশ, বেঙ্গালুরুতে ১৪১ শতাংশ, অমৃতসরে ৩৬৩ শতাংশ, জলন্ধরে ৪৭২ শতাংশ, লুধিয়ানায় ২৯০ শতাংশ, মোহালিতে ২১২ শতাংশ, পাতিয়ালায় ৩১২ শতাংশ, বিকানের ২৩৯ শতাংশ, চেন্নাইয়ে ১০০ শতাংশ, হয়দরাবাদে ২৯৪ শতাংশ এবং গাজিয়াবাদে ২৪৫ শতাংশ। এই ১৩টি শহরের বাইরে রয়েছে আগ্রা, যেখানে ভূগর্ভস্থ জল তোলার হার ৯৩ শতাংশ। এভাবেই চলতে থাকলে ২০২৮ সালের মধ্যে গুরুগ্রাম, ২০৩১ সালের মধ্যে ইন্দোর ও বিকানের, ২০৩৫-এর মধ্যে অমৃতসর এবং ২০৫০ সালের মধ্যে হয়দরাবাদ ও আজমেরে ভূগর্ভস্থ জল একদম শেষ হয়ে যাবে। তারপর ওই ৬টি শহরের জলের একমাত্র উৎস হতে চলেছে Surface Water Sources বা পুকুর, নদী, হ্রদের মতো ভূপৃষ্ঠে থাকা জলের উৎস। আর এই ছবিটাই কিন্তু বলে দিচ্ছে খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসতে চলেছে দেশের ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ। আগামী ২-৩ দশকের মধ্যে সারা দেশেই আরও বৃদ্ধি পাবে ব্যবহারযোগ্য জলের সঙ্কট। সংসদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। একইসঙ্গে দিল্লি, গুরুগ্রাম, বেঙ্গালুরুর মতো দেশের মোট ১৩টি শহরকে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে যে, ওইসব শহরে ভূগর্ভস্থ জল তোলার হার ১০০ শতাংশেরও বহু গুণ বেশি। যদিও তালিকায় বাংলার কোনও শহরের নাম নেই।

আরও পড়ুন বাংলার নির্মাণ শ্রমিক ৪৩ লক্ষ, উন্নয়নে বরাদ্দ ৫০০ কোটি

কেন্দ্রের এহেন তথ্যকে রীতিমতো উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, যথেচ্ছভাবে ভূগর্ভস্থ জল তুলে ফেলার কারণেই কি সেই ভাণ্ডার দ্রুত ফুরিয়ে আসছে? সংশ্লিষ্ট ১৩টি শহরের ক্ষেত্রে এই হার কত? দেখা যাচ্ছে, ভূগর্ভস্থ জল তোলার হার বার্ষিক অনুমোদনের ৭০ থেকে ৯০ শতাংশের মধ্যে, দেশের এমন ৮টি শহরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলি হল গান্ধীনগর (৮৮ শতাংশ), আম্বালা (৭২ শতাংশ), যমুনানগর (৭৪ শতাংশ), ইন্দোর (৮৪ শতাংশ), রতলাম (৭৭ শতাংশ), জয়সলমীর (৭৪ শতাংশ), জয়পুর (৯০ শতাংশ) এবং যোধপুর (৮৭ শতাংশ)। এই হার ৭০ শতাংশের কম, এমন শহর রয়েছে মাত্র দু’টি। আজমের (৩৩ শতাংশ) এবং ভেলোর (৫৫ শতাংশ)। যদিও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টেই বলা হয়েছে, বর্তমানে আজমের শহরে জলের একমাত্র উৎসই হল Surface Water Sources। ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ যে দ্রুত ফুরোচ্ছে, তারই একটি উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান দিয়ে উল্লিখিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে অমৃতসর, জলন্ধর, পাতিয়ালা, লুধিয়ানা, ফরিদাবাদ এবং যমুনানগর – এই ৬টি শহর একমাত্র ভূগর্ভস্থ জলের ওপরই নির্ভরশীল। কিন্তু ভবিষ্যতে এর মধ্যে তিনটি শহর ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ করতে পারবে। সেগুলি হল জলন্ধর, ফরিদাবাদ এবং যমুনানগর।

আরও পড়ুন ‘সরকারি কর্মচারিরা আমাদের বন্ধু’, শিলিগুড়িতে বললেন মমতা

এদিকে বাংলার বুকে বিপদ ঘনাচ্ছে অন্য জায়গায়। জাতীয় পরিবেশ আদালতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যর বিশেষজ্ঞ কমিটির তরফে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে যে পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে অক্সিজেন রয়েছে খুবই কম পরিমাণে। ওই জলাভূমির জল শুধু যে স্নানের অযোগ্য তাই নয়, জলে কলিফর্মের মত দূষকের পরিমাণও নির্ধারিত মাত্রা ছাড়িয়েছে। ফলে জলজ প্রাণী ও মাছের ক্ষেত্রে ওই জল উপযুক্ত নয়। আর এই রিপোর্ট দেখেই নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। রামসরের জলে অক্সিজেনের মাত্রাবৃদ্ধিতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি আদর্শকুমার গোয়েলের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যর বেঞ্চ। ২০০২ সালে রামসর তথা আর্ন্তজাতিক গুরুত্ব সম্পন্ন জলাভূমির তকমা পায় পূর্ব কলকাতা জলাভূমি। দীর্ঘকাল ধরে শহর কলকাতার কিডনি হিসাবে কাজ করছে শহরের পূর্বাংশে থাকা এই বিস্তীর্ণ জলাভূমি। গোটা কলকাতার দূষিত জল বহু পথ পেরিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে শোধিত হয়ে জমা হয় পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে। পূর্ব কলকাতার বাফার জোন তথা তোপসিয়া রোডে সায়েন্স সিটির পশ্চিমাংশে অবস্থিত এই জলাভূমির কিছু অংশ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে দু’টি সংস্থাকে ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়েছে কলকাতা পুরনিগম। সংস্থগুলি নিয়ম না মানার কারণে দূষিত হচ্ছে ওই অংশের জলাভূমি, এমনই অভিযোগে পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। তাঁর অভিযোগ ছিল, পুরসভার তরফে ছাড়পত্র থাকার কারণে প্রায়শই ওখানে স্থায়ী ও অস্থায়ী তাঁবু-প্যান্ডেল খাটিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। এরফলে ওই অংশের জলাভূমির উপর যে প্রভাব পড়তে পারে, তা জরিপ করতে কোনও করা হচ্ছে না।   

আরও পড়ুন ২৮ হাজার কোটি টাকার সড়ক নির্মান শুরু বাংলায়, জুড়বে মোদির বারাণসী

এহেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই জলাভূমির অংশের জল পরীক্ষার জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তিন সদস্যর কমিটি গঠন করে পরিবেশ আদালত। আদালতের নির্দেশ মতো কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়ে জানিয়েছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য জলাভূমির মধ্যে বাঁশ পুঁতে অস্থায়ী নির্মাণ তৈরি করা হয়েছে। যার জেরে জলাশয়ের বেশ কিছু অংশে স্বাভাবিক সূর্যালোক না পৌঁছনোয় দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি জলে ফাইটোপ্ল্যাংটনের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও জলে কলিফর্মের মত দূষকের পরিমাণও নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় বেশি বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছে কমিটি। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত নির্দেশে জানিয়েছে, সৌরবিদ্যুৎ চালিত ওয়াটার মিক্সিং ডিভাইস ব্যবহার করে অবিলম্বে জলে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি ২০১৭ সালের জলাভূমি আইন ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জলাভূমির রক্ষাণাবেক্ষণে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও কলকাতা পুরসভাকে সবরকম ব্যবস্থা করতে হবে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শুক্রবার রাতে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে কলকাতায় এলেন নরেন্দ্র মোদি

রাজভবনের পিস রুম মহিলাদের পিস হেভেনে পরিণত হয়েছে, কটাক্ষ চন্দ্রিমার

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রাজভবনের মহিলা কর্মীর

রবিবার থেকে জেলায় জেলায় শুরু হবে বৃষ্টি, সোমবার ভিজতে পারে কলকাতা

তৃণমূলের তারকা প্রচারের তালিকা থেকে বাদ পড়লেন কুণাল

প্রথম চেষ্টাতেই মাধ্যমিক পাশ করে চমকে দিলেন ফুটপাতের প্রিয়া

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর