নিজস্ব প্রতিনিধি: নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যেকার সংঘাত রাজ্যে সাংবিধানিক অচলাবস্থা ডেকে আনতে পারে। তাই দুই পক্ষই মুখোমুখি বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যেতেই পারে। এমন কথা তুলে ধরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল জগধীপ ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি বেশ কিছু বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে তথ্য চেয়েও পাইনি। এইসব তথ্য না পেলে রাজ্যে সাংবিধানিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। যেটা এড়িয়ে চলা আমাদের দুজনেরই সাংবিধানিক কর্তব্য। আপনার তরফ থেকে দীর্ঘদিন কোনও জবাব না পাওয়ায় আমার সব আলোচনার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তাই আপনার কাছে আমার অনুরোধ চলতি সপ্তাহের যে কোনও দিন রাজভবনে এসে আমার সঙ্গে আলোচনায় বসুন।’ একই সঙ্গে এই বিষয়টি এদিন টুইট করে তুলে ধরেছেন রাজ্যপাল। আর সেই টুইটে তিনি জুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপিও। আর এই নিয়েই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পাঠানো নিয়ে কুণাল কোনও মন্তব্য না করলেও, তাঁকে পাঠানো চিঠি প্রকাশ্যে আনায় রাজ্যপালকে এদিন কার্যত তোপ দেগেছেন তিনি। বলছেন, ‘রাজ্যপাল একটি সাংবিধানিক পদ। মুখ্যমন্ত্রীও সাংবিধানিক পদ। জগদীপ ধনকড় নামের ব্যক্তিটি সাংবিধানিক পদটির মর্যাদা ধুলোয় লুটিয়ে দিয়েছেন। সংবিধান একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে থেকে রাজ্যপালকে কাজ করার কথা বলেছে। কিন্তু উনি সেটা করছেন কোথায়। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতেই পারেন, ডেকেও পাঠাতে পারেন। তা নিয়ে আমাদের কারোর কিছু বলার নেই। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠি প্রকাশ্যে টুইট করাটা অসভ্যতা। চিঠি পাঠাতেই পারেন, কিন্তু টুইট কেন করলেন? উনি কী বলতে চাইছেন উনি জমিদার? সবই তো টুইট করেন, তাহলে চিঠি দেওয়ার কী আছে। একজন রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি প্রকাশ্যে আনছেন, এটা তাঁর রুচি। কিন্তু এটা সৌজন্যের মধ্যে পড়তে পারে না।’
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিবাদ নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে এই বিবাদের জেরে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রতিক কালে টুইটারে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে ব্লক করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে সংসদে স্বতন্ত্র প্রস্তাবও এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে জনমতও গঠন করার চেষ্টা করছেন। তবে, এসবের মধ্যেও রাজ্য সরকারের বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যপাল। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠি টুইটে তুলে ধরে যেন সেই বার্তাই দিলেন তিনি।