নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্প্রতি তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় রাজনীতি থেকে অপবসর নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এবার কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের গলায়ও শোনা গেল সেই সুর। এক সংবাদমাধ্যমককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘আপাতত ২০২৬ অবধি বিধায়ক আছি। তারপর নতুন করে ভাবতে হবে।’
মদন মিত্রের এই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, দলে আরও বেশি গুরুত্ব পেতে কি মদনের এই কৌশল? সম্প্রতি রাজনীতিতে নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ার দাবি করেছিলেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তিনি রাজনীতি থেকে সরে যেতে চান বলেও তৃণমূলের প্রকাশ্য সভায় জানিয়েছিলেন। তাপস রায় বলেছিলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, রাজনীতিতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আর থাকা উচিত নয়। আমি গাওস্করের ভক্ত। আমাদেরও নির্দিষ্ট বয়সের পর অবসর নেওয়া উচিত। আমি আগেও বলেছি, আমি দলকে সঠিক সময়ে জানিয়ে দেব অবসরের কথা।’
সেই সময় মদন মিত্র তাপস রায়ের বক্তব্য সমর্থন করেছিলেন। মদন মন্তব্য করেছিলেন, ‘১৯৭২ সাল চলে গিয়েছে, আর বয়সের বাহাত্তর যাবে না?’ এরপর বৃহস্পতিবার ফের অবসর নিয়ে নিজের ভাবনা ব্যক্ত করলেন কামারহাটির বিধায়ক। এদিন মদন মিত্র বলেন, ‘সকলকেই ভাবতে হবে যে আর দাঁড়ানো উচিত কি না। অন্য কারও দাঁড়ানো উচিত কি না। আমার থেকে ভাল আর কেউ আছে কি না। আমি বিধানসভায় গিয়ে অনেককেই বলতে শুনেছি, উনি ১১ বারের বিধায়ক। আমার খারাপ লাগে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সব না করে ছেলে, নাতি এঁদের সুযোগ দিলে ভাল হত। আমার খেলা দেখে নতুন প্রজন্ম শিখবে। নিজেকে নিজের মতো গুটিয়ে নিয়েছি। যা না পাওয়ার ছিল সেটা না পাওয়াই থাক। রোদন ভরা এ বসন্তের গান গাইতে যাইনি। আশি কেজি ওজন হয়ে গেছে। এটা ঠিক নয়। অনেক দিন তো হল।’
উল্লেখ্য রাজ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, রাজনীতিতেও একটা বয়সসীমা থাকা উচিত। কর্মক্ষেত্রে যেভাবে একটা বয়সের পর মানুষ অবসর নেন, রাজনীতিতেও একটা বয়সের পর নেতাদের সরে দাঁড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। অভিষেকের সেই মন্তব্যের পর সম্প্রতি শাসকদলের দুই বর্ষীয়ান বিধায়কের রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের ইচ্ছে প্রকাশ তাৎপর্যপূর্ন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিষেষজ্ঞদের একাংশ।