নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের জন্য সুখবর। রাজ্যবাসীর জন্য সুখবর। চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সুখবর। আগামী ২৭ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) হাত ধরে আবারও এক নয়া যাত্রা শুরু করতে চলেছে বাংলার নস্ট্যালজিয়ার মোটর নির্মাণের কারখানা হিন্দমোটর্স(Hind Morors)। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী যখন শিক্ষাসংক্রান্ত দুর্নীতি চক্রে ইডি হেফাজতে গিয়েছেন ঠিক তখনই বাংলার বুকে শিল্পের ক্ষেত্রে এই কারখানার উদ্বোধন কার্যত বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অনেকেই মনে করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের(Partha Chattopadhay) গ্রেফতারির ঘটনার ওপর থেকে কিছুটা চোখ ঘোরাতে এবং রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি ফেরাতে পাশাপাশি শিল্পোন্নয়নের বার্তা তুলে ধরতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। একই সঙ্গে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, ২০১৬ সালের জানুয়ারির আগে যাঁরা অবসর নিয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী পেনশনও(Pension) বাড়ানো হচ্ছে। কার্যত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘটনায় বিব্রত রাজ্য সরকারের দুই মাস্টারস্ট্রোক রবি সকালে।
জানা গিয়েছে, বাংলার বুকে অ্যাম্বাসাডর গাড়ি তৈরির কারখানা ছিল হুগলি জেলার উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভা এলাকায়। সেই কারখানা ছিল হিন্দমোটরস সংস্থার। কিন্তু বাম জমানায় সেই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মুখ্যমন্তড়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় এই কারখানা ফের খুলতে চলেছে চলতি মাসেই। এবার কিন্তু এই কারখানায় এখনই চার চাকার গাড়ি তৈরি হবে না। বরঞ্চ তৈরি হবে রেলের ওয়াগন এবং মেট্রোর কোচ। কাজ পাবেন প্রত্যক্ষ ভাবে অন্তত ৬ হাজার বেকার যুবক-যুবতীর। পরোক্ষ ভাবে অনুসারি শিল্পে আরও অন্তত ২৪ হাজার মানুষের কাজ হবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে চলেছে এই কারখানাকে ঘিরে। স্বাভাবিক ভাবেই হুগলি জেলার শিল্পাঞ্চল ও লাগোয়া এলাকার মানুষ এখন বেজায় খুশি। তাঁরা চাইছেন এই কারখানা খোলার পরে স্থানীয় বেকার ছেলেমেয়েরা যেন সেখানে কাজ পায়।
এই ঘটনার ঠিক আগেই এদিন রাজ্য সরকারের তরফে অবসরপ্রাপ্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পেনশন বাড়ানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, ২০১৬ সালের জানুয়ারির আগে যাঁরা অবসর নিয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী যে বেতন হবে, তার ৫০ শতাংশ পাবেন। আগে পুরনো বেতন কমিশনের নিরিখেই তাঁরা পেনশন পাচ্ছিলেন। ফলে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকরের পর এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়তি অর্থ হাতে পাবেন তাঁরা। নবান্নের হিসাব, সবমিলিয়ে সাড়ে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ কর্মচারী এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হতে চলেছেন। স্কুল শিক্ষক বা পুরসভা-পঞ্চায়েতের কর্মীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে অবসরকালীন সময়ের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ দেওয়া হয়। ফ্যামিলি পেনশনের ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য পান ৩০ শতাংশ। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারির আগে যাঁরা অবসর নিয়েছেন, তাঁরা কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে সর্বশেষ রোপা(ROPA) অনুযায়ী অর্থাৎ ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে পেনশন পাচ্ছিলেন না। এদিন রাজ্য অর্থদফতরের নতুন বিজ্ঞপ্তি জারির পর সেই সমস্যার সমাধান হয়ে গেল।