কৌশিক দে সরকার: শুভ জন্মদিন(Happy Birthday)। সারা বছর তোমার ভাল কাটুক, সাফল্যের মধ্যে দিয়ে কাটুক তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। দেখতে দেখতে ২৫ বছর পেরিয়ে পা ২৬তম বর্ষে। ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) হাত ধরে বাংলার বুকে প্রতিষ্ঠা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের। সেই প্রতিষ্ঠার মাত্র ১৩ বছরের মধ্যেই বাংলার(Bengal) বুকে বিপ্লব ঘটিয়ে পরিবর্তন ঘটান বাংলার জননেত্রী। দেখতে সেই পরিবর্তনও পার করে ফেলেছে এক দশকের পথ। লক্ষ্য এবার দিল্লি(Delhi)। সেখানেও ওড়াতে হবে বিজয় কেতান। ধর্ম, জাত-পাতের উর্ধ্বে উঠে সব মানুষের জন্য লড়াইয়ের লক্ষ্য নিয়েই তৃণমূলকে এগিয়ে নিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনস্বার্থ যেখানে সর্বাধিক গুরুত্ব পায়, স্বাভাবিকভাবে সেখানে মানুষ তাঁর প্রত্যুত্তর দেন ভোটের বাক্সের মধ্যে দিয়ে। কংগ্রেস না পারলেও তৃণমূল পেরেছে বাংলা থেকে লাল সন্ত্রাসকে হঠাতে। পেরেছে গেরুয়া আগ্রাসনকে রুখে দিতে। এবার লক্ষ্য দেশের বুক থেকে দাঙ্গাবাজদের বিতাড়িত করা।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রার্থী বাছবে প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক
তৃণমূল কংগ্রেস দেশের মধ্যে অন্যতম ব্যতিক্রমী দল, কেননা এই দলের নেত্রী নিজেই তো ভূ-ভারতে অন্যতম ব্যতিক্রমী। ১০০ বছরের সময়ে ১০০ কোটিতে ১জন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আসেন। তাই তৃণমূল ব্যতিক্রমী গোটা ভারতে। দলের জন্মদিনে আজ থেকেই নতুন লড়াইয়ের শপথ নিতে চলেছেন ঘাস ফুলের নেতা থেকে কর্মীরা, সাংসদ থেকে বিধায়কেরা, মন্ত্রীরা। বাংলার ক্ষমতা ধরে রেখে এবার দিল্লির মসনদে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়ে নতুন সংগ্রামের পথ প্রশস্ত করতে চলেছেন তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। তার আগে সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে দলের রাজনৈতিক ভিতকে আরও পোক্ত করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিকরা। কংগ্রেস ভেঙে অনেক দল তৈরি হয়েছে ভারতের রাজনীতিতে। কিন্তু অনেকেই দলকে টিকিয়ে রাখতে পারেননি। পেরেছেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার বিরোধী নেত্রী থেকে আজ তিনি মুখ্যমন্ত্রী এবং ভাবী ভারতের নেত্রী। এদিন সকালি তাই তিনি বার্তা দিয়েছেন ফেসবুকের মাধ্যমে দলের নেতা থেকে কর্মী মায় সমর্থক ও জনপ্রতিনিধিদেরও।
আরও পড়ুন রাত পোহালেই তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস, সোমবার নজরুল মঞ্চে বড় কর্মসূচি তৃণমূলের
অগ্নিকন্যা লিখেছেন, ‘এই ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়েছিল, ১৯৯৮ সালের পয়ালা জানুয়ারি। এই যাত্রাপথে আমাদের অগ্রাধিকার, দেশমাতৃকার সম্মান ও বাংলা মায়ের স্বার্থ। দেশের সাধারন মানুষের আবেগ আমাদের কাছে হৃদস্পন্দন সমান এবং বাংলার মানুষের ভালবাসা আমাদের কাছে প্রাণপ্রিয়। আজ আমরা তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের প্রতিটি কর্মীর আত্মত্যাগ এবং নিরলস প্রচেষ্টাকে কুর্ণিশ জানাই। তাঁরাই আমাদের দলের সম্পদ। আমি তাঁদের সকলকে নতমস্তকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, যাদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের দল নতুন ভোরের আলো দেখেছিল। আমাদের নতুন সদস্যদের আন্তরিক শুভকামনা যারা বিভিন্ন রাজ্য থেকে এই মহান পথ চলার সঙ্গী হয়েছেন। আমাদের প্রধান লক্ষ্য এই বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করা। আমরা বরাবরের মতো সাধারণ মানুষের সেবার জন্য সর্বদা উৎসর্গকৃত এবং তাঁদের সার্বিক মঙ্গলের জন্য সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন কোলাঘাটে সমবায় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় তৃণমূলের
এদিন দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে দিনভর সামাজিক কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। সকালে তৃণমূল ভবনে দলের পতাকা উত্তোলন হবে। এছাড়াও প্রত্যেকটি জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন নেতৃত্ব। বেশ কিছু জায়গায় থাকছে প্রভাত ফেরীরও আয়োজন। তপসিয়ায় তৃণমূলের মূল কার্যালয়ে নতুন ভবন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই কাজের সূত্রপাত হবে এদিন ভিত পুজোর মধ্যে দিয়ে। থাকবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও রাজ্যের সর্বত্র গুণীজনদের সম্বর্ধনা, দুঃস্থ মানুষদের শীত বস্ত্র প্রদান, হাসপাতালে ফল-মিষ্টি বিতরণ, পড়ুয়াদের শিক্ষণ সামগ্রিক প্রদান, রক্তদান শিবির সহ একাধিক সামাজিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে যাঁরা দলের প্রথম দিন থেকে রয়েছেন সেই সমস্ত কর্মীদের সংবর্ধনা, এবং দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে যাঁদের জীবন বলি দিয়েছেন, তাঁদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।