নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বুকে মহিলা ভোটারদের আগেই নিজেদের দিকে টেনে নিতে সক্ষম হয়েছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। সৌজন্যে অবশ্যই কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতার মতো আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলি। কিন্তু তার পরেও বার বার প্রশ্ন উঠছিল, মহিলারাই কী তৃণমূলের একমাত্র সম্পদ? পুরুষদের কী কোনও কদর নেই সেখানে? কোনও দাম নেই পুরুষের? সেই প্রশ্ন কার্যত সমালোচনার মতো বিঁধছিল শাসক দলকে। ফায়দা লুটছিল বিরোধীরা। সেই জায়গাতেই এবার আঘাত হানল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবার থেকে বাংলার সিঙ্গেল মাদার্স(Single Mothers) এবং একাকী পুরুষেরাও(Single Men) পাবে স্বাস্থ্যসাথী(Sasthasathi Card) প্রকল্পের সুযোগ।
আরও পড়ুন একই লোকের ছবি দিয়ে একাধিক ভোটার কার্ড, চিহ্নিত ৯ লক্ষ
বাংলার মানুষকে নিখরচায় উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প যা বাংলার বুকে শুধুই যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তাই নয়, দেশবিদেশের মানুষের নজরও কেড়েছে। পেয়ছে ভূয়ষী প্রশংসা। উপকৃত হয়েছেন কয়েক কোটি মানুষ। প্রতিবছর এক একটি পরিবারের জন্য বরাদ্দ এক একটি স্বাস্থ্যসাতী কার্ডের জন্য রাজ্য সরকার ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করে। সম্পূর্ণ ‘ক্যাশলেস’ পদ্ধতির এই চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ইস্যু করা হয় তা সাধারণত বাড়ির কোনও প্রবীণ মহিলার নামে করা হয়। পুরুষদের নামে কার্ড দেওয়া হয় না। তবে যার নাম কার্ড হয় তাঁর সঙ্গে বসবাস করা বাবা, দাদা, স্বামী, ছেলেরা ওই কার্ডের দৌলতে চিকিৎসা পরিষেবা পান সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সমস্যা দেখা যাচ্ছিল সিঙ্গেল মাদার্স, ডিভোর্সি মহিলা এবং অবিবাহিত বা একক পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে যারা একা থাকেন বা যারা অন্যের পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন না। এরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য বার বার আবেদন জানিয়েও কার্ড পেতেল না।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েতের ৩টি স্তরেই বাড়ল আসন, চাপে বিরোধীরা
এবার এদের জন্যই রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সিঙ্গেল মাদার্স বা ডিভোর্সি মহিলা এবং একাকী বসবাস করা পুরুষদেরও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সেই পুরুষ বা মহিলা একাকী থাকেন কিনা তা খিয়ে দেখার পরেই ওই কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একাকী বসবাস করা পুরুষ বা মহিলাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর বা বিধায়কের কাছ থেকে একাকী, পরিবারহীন থাকার ‘বৈধতাপত্র’ সংগ্রহ করে ফর্মের সঙ্গে জমা দিতে হবে আবেদন করার সময়। অবশ্য ফর্ম জমা পড়ার পর প্রয়োজনে সরেজমিনে গিয়ে বিভাগীয় আধিকারিকরা খতিয়ে দেখে তবেই একাকী থাকা পুরুষকেব বা মহিলাকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য অনুমোদন করবেন। রাজ্যে এইরকম সিঙ্গেল পুরুষ বা মহিলার সংখ্যা ৩০ লক্ষেরও বেশি। যদিও তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন জানিয়েছেন ১০ লক্ষের মতো পুরুষ বা মহিলা। সেই সব আবেদনের বেশিরভাগই এসেছে শহর এলাকা থেকে। দেখা যাচ্ছে যারা আবেদন করেছেন তাঁদের অধিকাংশই আবার মধ্যবয়স্কের। এছাড়া বয়স্করাও রয়েছেন।