নিজস্ব প্রতিনিধি: একদিন নয়, পর পর দুই দিন। বঙ্গ বিজেপির সাংসদদের সঙ্গে দেখা করার সময়ই দিলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। কবে তিনি বঙ্গ বিজেপি(BJP) সাংসদদের সময় দেবেন তা নিয়েও স্পষ্ট করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। আর তার জেরেই এখন অনেকেই মনে করছেন, মোদি কার্যত বঙ্গ বিজেপির সাংসদ থেকে শুরু করে নেতৃত্বকেও বিশেষ আর গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। কেননা সম্ভবত তিনি বুঝে গিয়েছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে আর ১৮জন সাংসদের সবাই জিতে আসতে পারবেন না এবং বাংলায় বিজেপি এখন শূন্যের পথেই এগিয়ে চলেছে। তাই ১৮জন সাংসদকে গুরুত্ব দিয়ে নিজের গুরুত্ব আর কমাতে চাইছেন না। আর এই সাক্ষাতের সময় না দেওয়া ঘিরে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বকে যে অস্বস্তির মুখে পড়তে হল তা কিছুটা হলেও লাঘব করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বও সেই হিসাবে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালো। বৃহস্পতিবার বঙ্গ বিজেপির তরফে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar) ও মনোজ টিগ্গা(Monoj Tigga)।
জানা গিয়েছে, এদিন অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে সুকান্ত ও মনোজ বাংলায় বিজেপির নেতা থেকে সাংসদ মায় বিধায়কদের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে স্থান পেয়েছে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির ঘটনা ও রাজ্য বিধানসভায় হওয়া ধ্বস্তাধ্বস্তির ঘটনাও। তবে এই সাক্ষাতের মধ্যেও উঠেছে প্রশ্ন। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে গত সোমবার রাজ্য বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়কেরা নাকি বিজেপি বিধায়কদের মারধর করেছেন। সেই মারে নাকি মনোজের পাঁজরের হাড় ভেঙেছে। কলকাতায় তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয় দেখে তাঁকে নাকি দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য। সেখানকার এইমস হাসপাতালে নাকি তাঁর চিকিৎসা হবে। আর এই সব দাবির মধ্যেই এদিন শাহী সাক্ষাতে মনোজ হাজির হওয়ায় এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে তাঁর আঘাতের সত্যতা নিয়ে। সরাসরি প্রশ্ন উঠেছে, পাঁজরের হাড় ভেঙে গিয়ে থাকলে কীভাবে মনোজ গেলেন শাহী সাক্ষাতে? নাকি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘুঁষিতে তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ভাঙার ঘটনায় নিজেদের মুখ ঢাকতে মনোজের মিথ্যা আঘাতের তথ্য সামনে আনছে বিজেপি?
রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার পাঁজরের হাড় যে ভাঙেনি, আর গোটা বিষয়টি যে মিথ্যা অভিযোগ সেটা গত সোমবারই টিগ্গার এক্সরে রিপোর্ট নিজের টুইটের মাধ্যমে তুলে ধরে ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ তথা পেশায় চিকিৎসক শান্তনু সেন। এদিন সুকান্তের সঙ্গে মনোজের শাহী সাক্ষাতের পরে নানা মহল থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, মনোজের যদি সত্যিই পাঁজরের হাড় ভেঙে থাকে তাহলে তাঁর চিকিৎসা না করিয়ে তাঁকে শাহী সাক্ষাতে নিয়ে যাওয়া হল কেন? আর তিনিই বা কী করে যন্ত্রণামুক্ত হয়ে শাহী সাক্ষাতে চলে গেলেন? যার বুকের পাঁজর ভাঙবে সেকি আদৌ এর ঘুরে বেড়াতে পারবে? শাহী সাক্ষাতে যাওয়ার মতো অবস্থায় থাকবে? কার্যত এই সব প্রশ্নের জেরে এখন বিজেপি আরও বেশি অস্বস্তির মুখে পড়ে গিয়েছে। একটি মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার জন্য তাঁরা এখন আরও কত মিথ্যার আশ্রয় নেয় সেটাই এখন দেখার।