নিজস্ব প্রতিনিধি: দিন যত যাচ্ছে, বাংলাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করতে ততই যেন মরিয়া হয়ে উঠছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) সরকার। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ আটকে রেখেছে সেই সরকার। নিত্যনতুন ফিকির বার করে বাংলাকে(Bengal) আর্থিকভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা অব্যাহত বলে দাবি রাজ্য প্রশাসনের। এই তালিকায় নয়া সংযোজন, শর্ত চাপিয়ে রাজ্যের পুরসভাগুলির জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ আটকে দেওয়ার চেষ্টা। কেন্দ্রের ফরমান, সম্পত্তিকর(Property Tax) খাতে আয় বৃদ্ধি করতেই হবে রাজ্যের পুরসভাগুলিকে(Municipalities)। অন্যথায় মিলবে না পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের(15th Finance Commission) টাকা। রাজ্যের ১২৮টি পুরসভার জন্যই প্রযোজ্য হবে এই নিয়ম। এমন শর্ত জানার পর স্বভাবতই তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের অন্দরে।
আরও পড়ুন মুরারুইয়ে বিক্ষোভ অস্বাভাবিক নয়, ক্ষোভ রয়েছে নিত্যযাত্রীদের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হল, মানুষের ওপর বাড়তি খরচের বোঝা চাপানো যাবে না। সেই কারণে কোনওভাবেই সম্পত্তিকর বৃদ্ধির পক্ষপাতী নন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ, এই খাতে আয় যে হারে বৃদ্ধি করা গেলে বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে সম্পত্তিকর বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা নেই। তাই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim) কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব মনোজ যোশিকে জানিয়ে দিয়েছেন, এটা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাকে বঞ্চনার আরও এক প্রেক্ষাপট রচিত হচ্ছে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় পুরসভাগুলিতে জল সরবরাহ, জঞ্জাল সাফাই, সবুজায়ন সহ বিভিন্ন পরিকাঠামোগত কাজ হয়। গত আর্থিক বছরে এই খাতে অর্ধেক টাকা এখনও পাওনা রাজ্য সরকারের। চলতি আর্থিক বছরের চার মাস পেরিয়ে গেলেও টাকা পায়নি পুরসভাগুলি।
আরও পড়ুন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে Drone দিয়ে চলবে নজরদারি
রাজ্যের নগরোন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভাগুলির জন্য অর্থ কমিশনের টাকা পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে সম্পত্তিকর বাবদ আয়ের পরিমাণ জানাতে হয়। বাংলার পুরসভাগুলির এই খাতে আয়ের পরিমাণ দেখে নিয়ে তারা শর্ত দেয়, সম্পত্তিকর আদায় বাড়াতে হবে। হিসেব করে দেখা যায়, অর্থ কমিশনের টাকা পেতে গেলে রাজ্যের প্রতিটি পুরসভাকে কমপক্ষে ৯ থেকে ১০ শতাংশ সম্পত্তিকর বৃদ্ধি করতে হবে। ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘দিল্লি থেকে সম্পত্তিকর বাড়াতে বলেছে। জল ও জঞ্জাল সাফাইয়ের ক্ষেত্রেও কর বসাতে বলেছে। আমরা বকেয়া কর আদায়ে গুরুত্ব দিতে পারি। কিন্তু কর বৃদ্ধি বা নতুন করে কর আরোপের পথে যেতে পারব না।’