নিজস্ব প্রতিনিধি: রাত্রিবেলা হঠাৎই একটা ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। সেই শব্দের উৎসের সন্ধানে তাঁরা বাড়ির বাইরে পা রাখতেই দেখেন সেখানে রক্তনাত অবস্থায় পড়ে আছেন বৃদ্ধ। দৌড়ে তাঁরা যান বৃদ্ধের বাড়িতে খবর দিতে। কিন্তু সেখানে তখন দরজায় ঝুলছে তালা। শেষে বৃদ্ধের মেয়েকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান প্রতিবেশীরা। মেয়ে ছুটে এসে বাড়ির দরজা তালা ভেঙে দেখেন খুন হয়ে গিয়েছেন তাঁরা মাও, অর্থাৎ ওই বৃদ্ধের স্ত্রীও। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে কলকাতার(Kolkata) আনন্দপুর(Anandapur) এলাকায়। বৃদ্ধ দম্পতির(Old Couple) এই মৃত্যু(Mysterious Death) ঘিরে রীতিমত রহস্য দানা বেঁধেছে। প্রশ্ন উঠেছে, স্ত্রীকে খুন করে বৃদ্ধ আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি দুইজনকেই খুন করে অপর কেউ গা ঢাকা দিয়েছে! ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ(Police)।
জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির নাম অমূল্য সমাদ্দার(৭৫) ও গীতা সমাদ্দার(৬৩)। গীতা গত ১০ বছর ধরে অসুস্থ। তিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। সম্প্রতি হার্টের সমস্যায় ভুগছেন অমূল্য। মঙ্গলবার তাঁর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধ দম্পতি একাই থাকতেন বাড়িতে। প্রতিবেশীদেরও কোনও অভিযোগ ছিল না তাঁদের নিয়ে। প্রতিবেশীদেরও দাবি, সমাদ্দার দম্পতি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গীতা দেবীর একপাশ প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছিল। মেয়েরাই তাঁদের দেখাশোনা করতেন। সোমবারও তাঁর ছোট মেয়ে বাবাকে ডাক্তার দেখিয়ে এনেছিলেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের অবশ্য প্রাথমিক ধারনা স্ত্রীকে খুনের পর অমূল্যবাবু আবাসনের ৪ তলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কেননা প্রশ্ন উঠছে, অমূল্যবাবুই যদি স্ত্রীকে খুব করে থাকেন তাহলে তাঁদের বাড়ির দরজায় তালা ঝোলালো কে? সেই তালার চাবিই বা কোথায়? অমূল্যবাবু সেই কাজ করলে তাঁর দেহের আশেপাশেই চাবির সন্ধান মিলতো। কিন্তু তা মেলেনি। আর এখানেই পুলিশ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চাইছে। যদিওতদন্তকারীদের অনুমান, চিকিৎসার খরচ এবং অসুস্থতার কারণেই স্ত্রীকে খুন করে অমূল্যবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন। সম্ভবত গতকাল রাত্রিবেলা কাঁচি দিয়ে স্ত্রীর গলা কেটে খুন করে ঘরে তালা দিয়ে চারতলা বাড়ির ছাদে উঠে সেখান থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।