নিজস্ব প্রতিনিধি: বড়সড় ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। ঠিক যেমনটি ঘটেছিল দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। জেলের অন্দরে গোলমাল পাকিয়ে কারা প্রশাসনকে নাজেহাল অবস্থায় ফেলে দিয়ে পালানোর ছক কষেছিল প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ৩০জন মাওবাদী। কিন্তু সেই ঘটনা ঘটার আগেই তা ফাঁস হয়ে গেল প্রশাসনের কাছে। আর তার জেরেই রাতারাতি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ৩০জন মাওবাদীকে রাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন জেলে পাঠিয়ে দিল রাক্য কারা প্রশাসন। ওই বন্দিদের দমদম, মেদিনীপুর, বর্ধমান সহ রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় জেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, অন্য জেলে স্থানান্তরের পর ওই বন্দিদের বিছিন্নভাবে ছড়িয়েছিটিয়ে বিভিন্ন সেলে রাখা হয়েছে। তারা যাতে কোনও অবস্থাতাতেই একে অপরের সঙ্গে শলাপরামর্শ না করতে পারে। একই সঙ্গে ওই সব জেলে এখন কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে সেখানে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ওই মাওবাদীরা ঘটাতে না পারেন। নিয়োগ করা হয়েছে অতিরিক্ত কারারক্ষীও। সেই সঙ্গে ওই সব সংশোধনাগারের সেলেও অতিরিক্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলের ভিতর মাওবাদীদের গতিবিধির দিকে নজর রাখতে সিসিটিভিও রাখা হচ্ছে।
রাজ্যের কারা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে থাকা জনা ৩০ মাওবাদী বন্দি কিছুদিন ধরেই নানা গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছিল। এর জেরে জেলের নিরাপত্তাও নানাভাবে বিঘ্নিত হচ্ছিল। সব মিলিয়ে ওই ৩০ বন্দি জেল কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জেলের ভিতরেও তাদের বেশ কয়েকবার পৃথক পৃথক সেলে সরানো হয়েছিল। তবে তারপরও বাগে আনা যাচ্ছিল না তাঁদের। সেকারণেই যাতে তাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়, তা নিয়ে কারাদফতরের কর্তা‑ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কারা কর্তৃপক্ষ। তার পরে রাজ্য কারা দফতরের আধিকারিকেরা বিষয়টি সরেজমিনে খোঁজখবর নেন। তারপরেই তাঁরা সবুজ সঙ্কেত দেন ওই বন্দিদের ভিন্ন ভিন্ন জেলে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। যে ৩০ মাওবাদীকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে, তাদের অনেকেরই মামলার শুনানি চলছে আলিপুর, বারাসত, বারাকপুর, কলকাতা নগর দায়রা আদালতে। দু’একটি মামলার আবার তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।