নিজস্ব প্রতিনিধি: পয়গম্বরকে ঘিরে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে কার্যত গোটা দেশজুড়েই আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপির(BJP) জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা(Nupur Sharma)। তার জেরেই কলকাতার(Kolkata) নারকেলডাঙা থানায়(Narkeldanga PS) তাঁর নামে একটি এফআইআর দায়ের হয়। পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি থানাতেও নূপুরের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছে। কাঁথিতে দায়ের হওয়া অভিযোগ ঘিরে পুলিশ(Police) খুব একটা তৎপরতা না দেখালেও নারকেলডাঙা থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে নূপুরকে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। সোমবার অর্থাৎ এদিনই ছিল সেই হাজিরা দেওয়ার শেষ দিন। কেননা পুলিশের তরফে তাঁকে ২০জুনের মধ্যে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নূপুর এদিন নারকেলডাঙা থানায় হাজিরা দেননি। পরিবর্তে কলকাতা পুলিশকে একটি ইমেল পাঠিয়ে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। খুন হয়ে যেতে পারেন তিনি। তাই ৪ সপ্তাহ বাদে তিনি হাজিরা দেবেন। সেই সময় তিনি চেয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে নূপুর কী আদৌ কলকাতায় আসবেন? নাকি সময় চেয়ে নিয়ে তিনি কার্যত বিদেশে গা ঢাকা দেওয়ার ফন্দি আঁটছেন?
নূপুরের বিতর্কিত মন্তব্যের পরে দেশের নানা প্রান্তে ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। তার আঁচ পরে বাংলাতেও। কলকাতা-সহ রাজ্যের অনেক জায়গায় নূপুরের নামে এফআইআর জমা পড়ে। নারকেলডাঙা থানা এমনই এক অভিযোগের ভিত্তিতে নূপুরকে ২০ জুনের মধ্যে সশরীরে হাজিরা দিতে বলেছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১ এ ধারায় নোটিস পাঠানো হয় নূপুরকে। সেই হাজিরাই পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন নূপুর। এদিকে নূপুরকে ঘিরে এদিন রাজ্য বিধানসভাও নড়েচড়ে বসেছে। এদিন বিধানসভায় নূপুরের বিরুদ্ধে একটি নিন্দাসূচক প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে বলা হয়, পয়গম্বরকে নিয়ে নূপুরের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বাংলা সবসময়ে শান্তির পক্ষে, শান্তি বজায় রেখেছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছি। তবে সারা দেশে যেভাবে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা হয়েছে, তা আসলে মূল বিষয় কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা। ধর্মের নামে, বিজেপির এক মুখপাত্র মন্তব্যের জেরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চলছে। এই ধরনের মন্তব্য করা এবং তাকে ঘিরে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’ সেই সময় বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের কাছে আবেদন করে বলেন, ‘আপনারা সকলে হাত তুলে পার্থদার প্রস্তাব সমর্থন করুন।’ এরপরেই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।